জনপ্রিয় শিল্পী জুবিন গর্গের মৃত্যুর ২০ দিন পর রহস্য আরও গভীর হল। সিঙ্গাপুরে স্কুবা ডাইভিং করতে গিয়ে অসমের এই গায়কের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর এক ভাইকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি, অসম পুলিশের এক উচ্চপদস্থ অফিসার ডিএসপি সন্দীপন গর্গকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। এই দুজনের বিরুদ্ধেই জুবিনের মৃত্যুর ঘটনায় যোগ থাকার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
ইতিমধ্যেই বুধবার সন্ধ্যায় ডিএসপি সন্দীপন গর্গকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। কামরূপ মেট্রোপলিটন জেলার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) সাসপেন্ড হওয়া এই পুলিশ অফিসারকে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছেন। জুবিনের মৃত্যুর ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট পাঁচ জন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পিটিআই সূত্রে খবর, অসম পুলিশ সার্ভিস (এপিএস) অফিসার সন্দীপন গর্গ জুবিনের সঙ্গে সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলেন এবং শিল্পীর শেষ মুহূর্তের সময় বোটে উপস্থিত ছিলেন বলে অভিযোগ। ১৯ সেপ্টেম্বর দ্বীপরাষ্ট্রটিতে সমুদ্রে স্কুবা ডাইভিং করার সময় জুবিন গর্গের আকস্মিক মৃত্যুতে গোটা দেশ চমকে ওঠে।
১১ কোটি টাকার লেনদেন ও তদন্তের গতি
জুবিনের মৃত্যুর তদন্তভার রয়েছে অসম পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অধীনে গঠিত একটি বিশেষ তদন্তকারী দলের (এসআইটি) হাতে। সিআইডি এই মামলায় জুবিনের দুই ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে (পিএসও) বরখাস্ত করেছে। কারণ, পুলিশ তাদের অ্যাকাউন্ট থেকে ১.১ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের বিশাল আর্থিক লেনদেনের সন্ধান পেয়েছে।
ইতিপূর্বে বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হলেও, সেই ডাকে সাড়া না পাওয়ায় তদন্তকারী দল নতুন করে অসম অ্যাসোসিয়েশন সিঙ্গাপুরের সঙ্গে যুক্ত ১০ জনকে সমন পাঠিয়েছে।
সিআইডি’র স্পেশাল ডিজিপি মুন্না প্রসাদ গুপ্ত পিটিআইকে বলেন, “আমরা সন্দীপন গর্গকে গ্রেফতার করেছি। এখন প্রয়োজনীয় আইনি আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করছি।” এই মামলাটি ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (বিএনএস) বিভিন্ন ধারায় দায়ের করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে খুন, খুনের সমান নয় এমন অপরাধমূলক হত্যা, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র এবং অবহেলার কারণে মৃত্যু ঘটানো।
এদিকে, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানিয়েছেন, গায়ক জুবিন গর্গের মৃত্যুর তদন্তে চার্জশিট তিন মাসের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আদালতে জমা দেওয়া হবে। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় আরও কারা যুক্ত, তা জানতে তদন্তে গতি এনেছে সিআইডি।