বলিউডের ‘স্বপ্নসুন্দরী’ মন্দাকিনী। আটের দশকে পরিচালক রাজ কাপুরের হাত ধরে তাঁর বলিউড অভিষেক ছিল এক আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা। ধূসর চোখ আর দুধসাদা গায়ের রঙের এই নায়িকাকে দেখে পুরুষের হৃদয়ে ঝড় উঠেছিল। তবে, রাজ কাপুরের আবিষ্কার এই নায়িকাকে একটি ছবিই রাতারাতি আইকনিক করে তোলে— ‘রাম তেরি গঙ্গা মইলি’ (Ram Teri Ganga Maili, ১৯৮৫)। এই ছবিতে তাঁর বোল্ড অবতার আজও বলিউডের যেকোনো সাহসী দৃশ্যকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে।
স্বপ্নসুন্দরী মন্দাকিনীর আবিষ্কার: জাসমিন থেকে মন্দাকিনী
ছোট থেকেই অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন মন্দাকিনী। মুম্বাইয়ে সেই চেষ্টা করার সময়ই তাঁর ওপর নজর পড়ে রাজ কাপুরের। তিনি তখন ছেলে রাজীব কাপুরকে নিয়ে একটি প্রেমের গল্প লিখছিলেন এবং নতুন মুখের সন্ধানে ছিলেন। মিরাটের জাসমিন জোসেফকে পছন্দ হয় তাঁর। সেই জাসমিনের নামই তিনি বদলে রাখেন মন্দাকিনী।
ঝরনা নয়, যে দৃশ্য নিয়ে আজও অস্বস্তি হয়
ছবিতে পাতলা সাদা শাড়িতে ঝরনার নিচে স্নানের দৃশ্যটি সেই সময়ে রীতিমতো বিতর্ক তৈরি করেছিল। তবে মন্দাকিনী সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ঝরনার দৃশ্যের থেকেও কঠিন ছিল এই ছবির আরেকটি দৃশ্য, যা মনে পড়লে আজও তিনি কেঁপে ওঠেন।
১৯৮৫ সালের ২৫ জুলাই ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর তুমুল হইচই শুরু হয়েছিল মন্দাকিনীর স্তন প্রদর্শনের দৃশ্য নিয়ে। ট্রেনের কামরায় বসে গঙ্গা (মন্দাকিনী) তাঁর সন্তানকে স্তনদুগ্ধ পান করাচ্ছেন— এই দৃশ্যে ক্যামেরায় স্পষ্ট দেখা যায় তাঁর স্তন।
রাজ কাপুরের ‘মগজে ধাক্কা’ দেওয়ার কৌশল
সেই আটের দশকে সিনেমার পর্দায় এমন দৃশ্য দেখে চারদিকে ‘রে রে’ পড়ে গিয়েছিল। শোনা যায়, রাজ কাপুর নাকি মন্দাকিনীকে স্পষ্টই বলেছিলেন, এই দৃশ্য দর্শকদের মগজে ধাক্কা দেওয়ার জন্যই তৈরি। পরিচালক এই দৃশ্যে যৌনতা ভুলে এক ছোট্ট বাচ্চার স্তনদুগ্ধ পান করাকেই গুরুত্ব দিতে চেয়েছিলেন।
সাক্ষাৎকারে মন্দাকিনী জানান, “পুরো দৃশ্যটা প্রথমে একেবারে রিয়েল ভাবেই শুট করতে চেয়েছিলেন রাজ কাপুর। কিন্তু আমার একটু অস্বস্তি ছিল। তাই ক্যামেরার কারসাজি ও প্রযুক্তি ব্যবহার করেই সেই রাতে শুট হয়।”
মন্দাকিনীর কথায়, আজকাল বোল্ড ছবি করা নায়িকাদের কাছে ‘জলভাত’ হলেও, আটের দশকে এমন সাহসী পদক্ষেপ খুব কম নায়িকাই দেখাতে পেরেছিলেন।