কাজলের দুরন্ত শৈশব! বোর্ডিং স্কুল থেকে পালানোর চেষ্টা, কারণ জানলে চমকে উঠবেন

নব্বই দশকের বলিউড দাপিয়ে বেড়ানো অভিনেত্রী কাজল। সফল কর্মজীবন এবং সংসার সামলানোর পাশাপাশি তাঁর ব্যক্তিজীবনও কম আকর্ষণীয় নয়। সম্প্রতি একটি পডকাস্টে এসে তিনি নিজের ছোটবেলার এক অজানা এবং রোমাঞ্চকর ঘটনা তুলে ধরলেন, যা তাঁর শৈশবের এক অন্য দিক উন্মোচন করেছে। বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ দেখলেও, পারিবারিক বন্ধনে আবদ্ধ কাজল নিজেকে মারাঠি ও বাঙালির এক স্বতন্ত্র ‘ককটেল’ বলেই বর্ণনা করেন। তাঁর এই গল্প শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছে।

ঘটনাটি তখন, যখন কাজলের বয়স মাত্র এগারো বছর। তিনি পড়াশোনা করতেন পঞ্চগনির এক বোর্ডিং স্কুলে। একদিন সেখানেই ঘটেছিল তাঁর জীবনের অন্যতম বড় দুঃসাহসিক প্রচেষ্টা – বোর্ডিং স্কুল থেকে পালিয়ে মুম্বাই আসার চেষ্টা! কিন্তু কেন এই ঝুঁকি নিয়েছিলেন ছোট্ট কাজল?

পডকাস্টে সেই দিনের কথা বলতে গিয়ে কাজল বলেন, “আমার তখন এগারো বছর বয়স। হঠাৎই খবর পাই আমার দিদা শোভনা সামন্তের মা, অর্থাৎ আমার প্রমাতামহী খুব অসুস্থ। আমি মাকে ফোন করে বলি, আমি তাঁকে দেখতে বাড়ি যেতে চাই। কিন্তু মা রাজি হলেন না। কারণ, আমার পরীক্ষা ছিল, আর পড়াশোনাটা তখন মায়ের কাছে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ডিসেম্বরের ছুটিতে বাড়ি নিয়ে যাবেন বলে মা কথা দেন।”

কিন্তু মায়ের এই আশ্বাস মানতে রাজি ছিলেন না ছোট্ট কাজল। প্রমাতামহীর অসুস্থতা তাঁকে এতটাই বিচলিত করেছিল যে, তিনি এক দুঃসাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন। সেই সময় তাঁর এক সহপাঠীও কোনো এক অজানা কারণে বোর্ডিংয়ে থাকতে চাইছিল না। ব্যস, দুজনে মিলে ছক কষে ফেললেন – বোর্ডিং থেকে পালিয়ে মুম্বাই চলে যাবেন!

পরিকল্পনা অনুযায়ী, এক সকালে উঠে তারা দুজনেই বোর্ডিং থেকে বেরিয়ে পড়েন এবং চলে যান তাদের ‘লোকাল গার্জেন’ অর্থাৎ কাজলের মামার কাছে। অত্যন্ত কৌশলে কাজল মামাকে বোঝান যে, মা নাকি ফোন করে তাদের বাড়ি যেতে বলেছেন এবং বাসে তুলে দিতে বলেছেন। মামাও সরল বিশ্বাসে তাঁদের বাসে তুলে দেন। কাজল অপেক্ষা করতে থাকেন, এই বুঝি বাস ছাড়ল!

কিন্তু নিয়তির পরিকল্পনা ছিল অন্য। তিনি যখন অপেক্ষায়, তখনই বোর্ডিং স্কুল থেকে শিক্ষিকারা এসে হাজির! তাঁদের কান ধরে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বোর্ডিংয়ে। এরপর মাকে খবর দেওয়া হয়। মা নিজের শুটিং ছেড়ে তড়িঘড়ি বোর্ডিংয়ে চলে আসেন। কাজল বলেন, “এরপর আমি এত বকাঝকা খেয়েছিলাম, যে আর আমার মাথায় পালানোর চিন্তা আসেনি।”

কাজলের এই ঘটনা কেবল তাঁর দুরন্ত শৈশবেরই এক ঝলক নয়, এটি একটি শিশুর গভীর পারিবারিক টান এবং সংবেদনশীলতারও এক সুন্দর প্রকাশ। প্রমাতামহীর প্রতি তাঁর স্নেহ এবং তাঁদের দেখতে না পাওয়ার আকুতিই তাঁকে এই ‘পাগলামি’ করতে বাধ্য করেছিল। বলিউড কুইনের জীবনের এই অজানা অধ্যায় তাঁর ভক্তদের কাছে তাঁকে আরও বেশি মানবিক করে তুলল।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy