বলিউডে আজকের সফল তারকাদের শুরুর দিনগুলো কেমন ছিল? একদিকে সারাদিনের খাটুনির জন্য স্রেফ ১৫০ টাকা, অন্যদিকে প্রচুর পরিশ্রম করেও কেউ পারিশ্রমিকই পেতেন না! শুনতে সিনেমার গল্পের মতো লাগলেও, এটাই সত্যি। সম্প্রতি জনপ্রিয় পরিচালক-কোরিওগ্রাফার ফারাহ খান এবং গায়ক শান ফিরে গেলেন সেই নয়ের দশকের স্মৃতিতে, যখন এক ছবিই বদলে দিয়েছিল তাঁদের ভবিষ্যৎ: ‘জো জিতা ওহি সিকান্দর’।
‘জুনিয়র ডান্সার’ ফারাহ, ‘স্যাক্সোফোন’ শান
জনপ্রিয়তা পাওয়ার আগে থেকেই শান এবং ফারাহ একে অপরের পরিচিত। সম্প্রতি শানের বাড়িতে গিয়ে একটি ভ্লগে দুই তারকা যখন স্মৃতিচারণায় মগ্ন হন, তখনই সামনে আসে চমকপ্রদ তথ্য।
আলাপচারিতার মাঝেই ফারাহ জানান, “প্রথম সিনেমা যেখানে শান কাজ করেছিল, সেটা ছিল ‘জো জিতা ওহি সিকান্দর’।” শান হেসে যোগ করেন, “হ্যাঁ, আমি সেখানে স্যাক্সোফোন বাজাচ্ছিলাম!” আর ফারাহ তখন সেই ছবির জুনিয়র ডান্সার হিসেবে কাজ শুরু করেন।
চুমুর দৃশ্যে ফারাহ খান!
তবে এরপরেই আসে আসল চমক। ফারাহ জানান, তিনি প্রথমে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করলেও, শুটিং চলাকালীন একের পর এক ব্যাকগ্রাউন্ড ডান্সার অনুপস্থিত থাকায় তাঁকে একাধিক জায়গায় নাচতে হয়। এমনকী একটি দৃশ্যে দীপক তিজোরি যখন নায়িকার গালে চুমু খাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু নায়িকা রাজি না হওয়ায় ফারাহকেই সেই শটে পাঠানো হয়!
হাসতে হাসতে ফারাহ বলেন, “ওই দৃশ্যে যাকে তিজোরি চুমু খাচ্ছে, সে আসলে আমি ছিলাম!”
পারিশ্রমিক বিতর্ক: ‘তুই টাকাও পেয়েছিস?’
সবচেয়ে অবাক করা তথ্যটি আসে যখন পারিশ্রমিকের প্রসঙ্গ ওঠে। শান বলেন, “আমি তখন দিনে ১৫০ টাকা পেতাম, অন্যরা পেত ৭৫ টাকা।”
শুনেই ফারাহর বিস্মিত প্রতিক্রিয়া: “তুই টাকাও পেয়েছিস? আমাকে তো এক পয়সাও দেয়নি!”
ফারাহর সংযোজন, “পেমেন্ট না পেলেও, ওই ছবিটাই আমার জীবনের টার্নিং পয়েন্ট ছিল। ওই ছবিটাই আমাকে কোরিওগ্রাফির দুনিয়ায় সুযোগ এনে দেয় এবং আমার ভাগ্য ঘুরিয়ে দেয়।”
বাবা রামদেবের সঙ্গে সলমনের তুলনা
প্রসঙ্গত, মাসখানেক আগে ফারাহ খান যোগগুরু বাবা রামদেবের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়েও তাঁর ভ্লগে দারুণ রসিকতা করেন। রামদেব যখন বলছিলেন, “অন্যদের জন্য প্রাসাদ বানিয়েছি আমি, আর নিজে থাকার জন্য ঝুপড়ি,” তখনই ফারাহ দারুণ টিপ্পনি কেটেছিলেন: “আরে, আপনি তো একেবারে সলমন খানের মতো! ও-ও তো এক কামরার ফ্ল্যাটে থাকে, কিন্তু বাকিদের জন্য বানিয়েছে রাজপ্রাসাদ।” কথা শেষ হতেই রামদেব নিজেও হেসে সলমনের সঙ্গে নিজের এই তুলনা মেনে নেন।
আজ ফারাহ খান বলিউডের প্রথম সারির পরিচালক-নৃত্য পরিচালক এবং শান দেশের অন্যতম জনপ্রিয় প্লেব্যাক সিঙ্গার। তাঁদের এই স্মৃতিচারণা যেন প্রমাণ করে, জীবনের বড় জায়গায় পৌঁছতে গেলে কতটা ধৈর্য, কঠোর পরিশ্রম আর না-পাওয়ার মধ্যেও বিশ্বাস ধরে রাখতে হয়।