গায়ক জুবিন গার্গের অকালমৃত্যুতে এখনও স্তম্ভিত তাঁর লক্ষ লক্ষ ভক্ত। তাঁর জীবন কীভাবে শেষ হলো, তা নিয়ে যখন ধোঁয়াশা কাটেনি, তখনই তাঁর আপ্তসহায়ক সিদ্ধার্থ শর্মার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠতে শুরু করে। জুবিনের টাকাপয়সার হিসাব নয়ছয় করা এবং বিশ্বাসঘাতকতা করার মতো গুরুতর গুঞ্জন রটে। অবশেষে, সব বিতর্ককে ছাপিয়ে নীরবতা ভেঙে প্রথমবার মুখ খুললেন সিদ্ধার্থ।
সিট-এর তল্লাশির পরই মুখ খুললেন সিদ্ধার্থ
অসম সরকারের গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) গুয়াহাটির দাতালপাড়ায় সিদ্ধার্থ শর্মার বাড়িতে তল্লাশি চালানোর পরই তিনি একটি খোলাচিঠি লেখেন। সিদ্ধার্থ সেই চিঠিতে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগকে “সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং দুঃখজনক” বলে দাবি করেছেন।
তিনি স্পষ্ট জানান, বিশেষ তদন্তকারী দলের সঙ্গে তিনি পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন এবং ভবিষ্যতেও করবেন। একই সঙ্গে গায়কের অনুরাগীদের উদ্দেশে তিনি অনুরোধ করেন, “দয়া করে শান্তিতে তদন্ত হতে দিন। জুবিনদার প্রতি এটাই আমাদের কর্তব্য।”
৩৮ হাজার গানের স্বত্ব নিয়ে বড় দাবি
সিদ্ধার্থ তাঁর খোলাচিঠিতে জুবিন গার্গের গান ও আয়ের উৎস নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন। তিনি দাবি করেন:
পুরনো গান: তিনি জুবিনের জীবনে আসার অনেক আগেই তাঁর প্রায় ৩৮ হাজার গান বিভিন্ন প্রযোজনা সংস্থা ও সঙ্গীত কোম্পানির হাতে চুক্তির মাধ্যমে বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। এর মধ্যে বহু বড় হিট গানও রয়েছে।
জুবিনের আক্ষেপ: জুবিন প্রায়ই আক্ষেপ করতেন যে, গান থেকে প্রযোজকেরা কোটি কোটি টাকা আয় করছেন, অথচ তিনি নিজে খুবই সামান্য পারিশ্রমিক পান।
নতুন সংস্থার হিসেব ও স্ত্রীর হাতে টাকা
সিদ্ধার্থ জানান, ২০২১ সালে জুবিন তাঁর নতুন গানগুলির স্বত্ব নিজের কাছে রাখতে চেয়েছিলেন। সেই ভাবনা থেকেই জন্ম নেয় ‘জুবিন গার্গ মিউজিক এলএলপি’। এই সংস্থার ৬০ শতাংশ মালিকানা ছিল স্বয়ং জুবিনের।
সিদ্ধার্থ শর্মা দৃঢ়ভাবে বলেন, “এই সংস্থা মাসিক কয়েক হাজার টাকা আয় করেছে মাত্র। সবটাই সংস্থার অ্যাকাউন্টে রয়েছে। এক টাকাও আমি ব্যক্তিগতভাবে নিইনি। জুবিনদার পরিবারের প্রাপ্য যাতে সঠিকভাবে তাঁদের হাতে পৌঁছয়, সেটা আমি নিশ্চিত করব।”
এছাড়া গীতিকার ও সুরকার হিসেবে জুবিনের ব্যক্তিগত আয় তাঁর নিজস্ব অ্যাকাউন্টে জমা হত। সিদ্ধার্থ আশ্বাস দেন যে, সেই টাকাও পুরোপুরি জুবিনের স্ত্রী গরিমার হাতে তুলে দেওয়া হবে।