বিড়াল দেখলেই তাড়িয়ে দিচ্ছেন? এটি শুধু পোষ্যই নয়, বাস্তুতন্ত্রের রক্ষক ও ইতিবাচক শক্তির উৎস

প্রকৃতির প্রতিটি জীবেরই সৃষ্টির পেছনে রয়েছে সুনির্দিষ্ট কারণ, যা আমাদের পরিবেশ এবং জীবনযাত্রার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অনেক সময় আমরা যেসব প্রাণীকে অবহেলার চোখে দেখি বা অপ্রয়োজনীয় বলে মনে করি, প্রকৃতপক্ষে তাদের অবদান অনস্বীকার্য। এমনই এক প্রাণী হল বিড়াল। কারও কাছে আদরের পোষ্য, আবার কেউ কেউ কুসংস্কারের বশে এদের অপছন্দও করেন। কিন্তু প্রকৃত বাস্তবতা হলো, প্রকৃতির বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় বিড়ালের ভূমিকা অপরিহার্য। বিশেষ করে ইঁদুর নিয়ন্ত্রণে এদের গুরুত্ব অপরিসীম।

ঘরবাড়িতে ইঁদুরের উপদ্রব মানে খাদ্যদ্রব্য, বইপত্র, জামাকাপড় নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা, এমনকি রোগ ছড়ানোর ভয়। অথচ একটিমাত্র বিড়ালই সারাবছরে ৩০-৫০টি ইঁদুর শিকার করে খেয়ে এই সমস্যা অনেকটাই কমিয়ে দেয়। শুধু ঘরেই নয়, প্রকৃতিতেও বিড়ালের অনুপস্থিতি মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যে অঞ্চলে বিড়াল থাকে না, সেখানে ইঁদুরের সংখ্যা অনেক গুণ বেড়ে যায়। ইঁদুররা আবার সামুদ্রিক পাখির ডিম নষ্ট করে দেয়। এর ফলে বিপন্ন হয়ে পড়ে সেই অঞ্চলের পাখির প্রজাতি এবং সম্পূর্ণ বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য।

প্রকৃতিতে বিড়ালকে রক্ষা করার অন্যান্য কারণ
বাস্তুতন্ত্রের বাইরেও বিভিন্ন বিশ্বাস এবং শাস্ত্র অনুযায়ী বিড়ালের গুরুত্ব রয়েছে:

বাস্তুশাস্ত্র ও জ্যোতিষ: বাস্তু বিশেষজ্ঞেরা মনে করেন, বিড়াল ঘরের নেগেটিভ ভাইবস বা চাপা শক্তি শুষে নেয়। বহু বিশ্বাস অনুসারে, বিড়াল, বিশেষ করে কালো বিড়াল, অদৃশ্য নেতিবাচক শক্তি বা আত্মাকে শনাক্ত করতে পারে এবং আপনার থেকে দূরে রাখে।
কেতুর প্রভাব হ্রাস: জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী, যাঁদের কেতুর দোষ আছে, বা কেতু প্রতিকূল অবস্থায় রয়েছে, তাঁদের কালো বা ধূসর বিড়াল পোষার পরামর্শ দেওয়া হয়। বিশ্বাস করা হয়, এতে কেতুর কুপ্রভাব হ্রাস পায় এবং মানসিক স্থিতি ও আত্মিক উন্নতি ঘটে।
বিড়ালের ক্ষতি করা উচিত নয়
দুঃখজনক হলেও সত্যি, অনেকেই বিড়াল দেখলে ঢিল ছোড়ে বা লাঠি দিয়ে মারার চেষ্টা করে। তবে বাস্তুশাস্ত্র অনুসারে, বিড়ালকে মারা বা তাড়িয়ে দেওয়া উচিত নয়। বরং বিড়াল যাতে নিরাপদে থাকে, সেই ব্যবস্থা করা উচিত।

প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা থেকে শুরু করে মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব— বিড়াল বহুলাংশে আমাদের জীবন ও পরিবেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই এই প্রাণীটিকে অবহেলা না করে, তাদের প্রতি সহনশীল হওয়া এবং রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।

বিড়াল সম্পর্কে আপনার কি কোনো ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আছে? তাদের কি আপনার জীবন বা পরিবেশে কোনো ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে?

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy