সামান্য উস্কানিতেই মাথা গরম হয়ে যায়? এই আচরণ শুধু মানসিক নয়, জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, এর পেছনে কিছু গ্রহগত প্রভাব থাকতে পারে। বিশেষত, মঙ্গল, রাহু ও শনি গ্রহের অশুভ প্রভাব থাকলে মানুষের রাগের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যেতে পারে। আপনার কি হুটহাট মাথা গরম হয়ে যায়? এর পেছনে কোনও গ্রহের প্রভাব আছে কিনা, তা বুঝবেন কীভাবে?
গ্রহের প্রভাবে রাগ
আমাদের চারপাশে এমন অনেক মানুষকে দেখা যায় যারা অল্পতেই রেগে যান। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী, এই আচরণের পেছনে কিছু নির্দিষ্ট গ্রহের প্রভাব থাকতে পারে:
মঙ্গলের প্রভাব: জ্যোতিষশাস্ত্রে মঙ্গলকে ‘যোদ্ধা গ্রহ’ বলা হয়। এটি সাহস, শক্তি ও আগ্রাসনের প্রতীক। যদি কারও জন্মকুণ্ডলীতে মঙ্গল অশুভ স্থানে থাকে বা পাপগ্রহের সঙ্গে যুক্ত থাকে, তবে সেই ব্যক্তি হঠাৎ হঠাৎ রেগে যান এবং কথা না ভেবেই প্রতিক্রিয়া দেখান। একে ‘মাঙ্গলিক দোষ’ বলা হয়।
রাহুর বিভ্রান্তিকর প্রভাব: রাহু এক রহস্যময় ছায়া গ্রহ। এটি মানুষের চিন্তা ও আবেগকে অস্পষ্ট করে তোলে। রাহুর প্রভাব থাকলে ব্যক্তি অহেতুক উত্তেজিত হন, কল্পনার জগতে ভেসে বেড়ান, এবং সহজেই রেগে যান বা বিরক্ত বোধ করেন।
শনির দোষ: শনি সাধারণত ধৈর্য ও সংযমের প্রতীক হলেও, যখন এটি রাহু, মঙ্গল বা কেতুর সঙ্গে অশুভ অবস্থানে থাকে, তখন মানুষ সহজেই ধৈর্য হারান। শনির সাড়ে সাতি বা ধৈয়ার সময় এমন প্রবণতা বেশি দেখা যায়।
চন্দ্রের দুর্বলতা: চন্দ্র মনের প্রতীক। যদি চন্দ্র কুণ্ডলীতে দুর্বল হয়, বিশেষ করে অশুভ গ্রহ দ্বারা আক্রান্ত হয়, তাহলে মানসিক অস্থিরতা ও রাগ বেড়ে যায়। মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলার সম্ভাবনাও তৈরি হয়।
রাগ কমাতে কী করবেন?
জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী, গ্রহের অশুভ প্রভাব কমাতে কিছু প্রতিকার মেনে চলতে পারেন:
১. রোজ সকালে চন্দ্র ও শিবের জন্য জল দান করুন।
২. ‘ওঁ শ্রী হনুমতে নমঃ’ মন্ত্র জপ করা শুভ।
৩. নিয়মিত রক্তদান করুন বা লাল বস্তু দান করতে পারেন।
৪. প্রতি মঙ্গলবার ও শনিবার উপোস রেখে মঙ্গল এবং শনিদেবের পুজো করুন।
৫. মানসিক শান্তির জন্য রুদ্রাভিষেক বা মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র জপ করতে পারেন।
যখন তখন মাথা গরম হওয়া শুধুই মানসিক নয়, এর পেছনে জ্যোতিষীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যা। সঠিক প্রতিকার ও আত্মনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এই প্রবণতা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আপনি কি জ্যোতিষশাস্ত্রে বিশ্বাস করেন এবং এই প্রতিকারগুলি মেনে চলতে ইচ্ছুক?