মানুষের জীবনে বই পরম বন্ধু। এককথায় স্বার্থহীন বন্ধু, যা শুধু দেয় দিয়েই যায়। তবে বিশ্বগ্রামের এই আধুনিক যুগে মোবাইল ফোনের আসক্তি যেনো অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে বই পড়ার অভ্যাস। যা দিনে দিনে দুর্বল করছে মেধা শক্তির সাথে ব্রেনকেও।
বইয়ের রয়েছে অনেক গুণ। বই পড়লে যেমন জ্ঞান বৃদ্ধি প্রায় ঠিক তেমনি শরীর সুস্থ রাখতেও সাহায্য করে। আর যার কারণেই চিকিৎসকেরা প্রতিদিন প্রায় এক ঘণ্টা বই পড়ার পরামর্শ দেন। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে বই পড়ার সময় আমাদের মস্তিষ্কের ভেতরে বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটতে শুরু করে, যার প্রভাবে একাধিক রোগ-ব্যাধি দূর হয়।
দেখে নেওয়া যাক বই পড়লে ঠিক কী কী সুফল আমরা পেতে পারি –
বই পড়লে মানুষের স্মৃতিশক্তি বাড়ে। বই পড়ার সময় মস্তিষ্কের যে অংশটি স্মৃতি ধরে রাখার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, সেই অংশটি বিশেষ ভাবে সক্রিয় হয়। তাই বই পড়লে মনে রাখার ক্ষমতা অনেকটাই বাড়ে।
অনেকেরই রাতে ঘুম আসতে দেরি হয়। আর এই সমস্যা দুর করতে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বই পড়ার সময় এমন কিছু হরমোনের ক্ষরণ হয়, যা ঘুমিয়ে পড়তে সাহায্য করে। তাই রাতে শান্তিতে ঘুমাতে চাইলে কিছুক্ষণ বই পড়ে শোয়া উত্তম।
প্রাত্যহিক জীবনে মানুষের জীবনযাত্রায় দুশ্চিন্তার যেন শেষ নেই। মন এবং মস্তিষ্কের ক্লান্তি দূর করতে বইয়ের সঙ্গে বন্ধুত্বই দিতে পারে শান্তি। দুশ্চিন্তা কমানোর ক্ষেত্রে বই হতে পারে অন্যতম হাতিয়ার।
কর্মক্ষেত্রে হোক কিংবা পড়াশোনায়, যে কোনও ক্ষেত্রেই উন্নতি করতে গেলে মনোযোগ সহকারে সেই কাজটি করা একান্ত প্রয়োজন। আর এক্ষেত্রে আপনাকে সাহায্য করতে পারে বই। প্রতিদিন বই পড়লে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে উন্নতি ঘটে মনঃসংযোগের ক্ষমতারও।
বই পড়লে বাড়তে পারে আয়ুও। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত বই পড়েন এমন মানুয অন্যদের তুলনায় দীর্ঘজীবী হন।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, বই মানে কিন্তু কাগজে ছাপা বই-ই পড়তে হবে। মোবাইল বা ট্যাবের আলোকিত পর্দায় বই পড়লে সুফল পাওয়ার সম্ভাবনা কম। আধুনিক জীবনের সঙ্গে তাল রেখে ব্যবহার করা যেতে পারে ই-বুক রিডারও। কারণ, তার পর্দা থেকে আলো বিচ্ছুরিত হয় না।