এসআইআর শুনানিতে তুঙ্গে সংঘাত! ভোটারদের ‘হেনস্থা’ রুখতে সরাসরি নির্বাচন কমিশনে অভিষেকের টিম

রাজ্যে ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য নির্বাচন কমিশনের ‘স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন’ (এসআইআর) বা বিশেষ নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়া শুরু হতেই বঙ্গ রাজনীতিতে বারুদের গন্ধ। অভিযোগ উঠেছে, ভোটার যাচাইয়ের নামে বিশেষ করে প্রবীণ ও অসুস্থ নাগরিকদের অকারণে শুনানিকেন্দ্রে ডেকে হয়রান করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিকে ‘অমানবিক’ আখ্যা দিয়ে সরাসরি নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে রণংদেহি মেজাজে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, বাংলার মানুষকে এই হয়রানি থেকে বাঁচাতে তৃণমূলের একটি প্রতিনিধি দল সোমবারই দিল্লির কমিশনের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছে।

দলের বুথ লেভেল এজেন্টদের (বিএলএ) সঙ্গে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কমিশনের এই ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন। তাঁর অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার জন্য সুপরিকল্পিতভাবে ‘টার্গেট’ করা হচ্ছে। অভিষেক প্রশ্ন তুলেছেন, “যাঁরা বয়সের ভারে ন্যুব্জ বা অসুস্থ, তাঁদের কেন বাড়ি থেকে দূরে শুনানিকেন্দ্রে তলব করা হচ্ছে? যাঁদের ভোট বাড়ি থেকে নেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে, তাঁদের শুনানিও বাড়িতে গিয়ে করা হোক।” শুধু তাই নয়, অভিষেক দাবি করেছেন যে ১ কোটি ৩৬ লক্ষ ভোটারের তালিকায় ‘লজিক্যাল ডিসক্রিপ্যান্সি’ বা তথ্যগত অমিল দেখা যাচ্ছে, কমিশন সেই তালিকা কেন জনসমক্ষে আনছে না?

তৃণমূলের অভিযোগ, এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ নয় এবং এটি ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করছে। অভিষেক বলেন, “অন্যান্য রাজ্যে ভোটার বাদ যাওয়ার হার বেশি হওয়া সত্ত্বেও শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গকে কেন হেনস্থা করা হচ্ছে?” এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় অভিষেক তাঁর বিএলএ-দের নির্দেশ দিয়েছেন যেন তাঁরা প্রতিটি শুনানিকেন্দ্রে ছায়ার মতো ভোটারদের পাশে থাকেন। এই অভিযোগগুলো লিখিতভাবে জানাতে এবং অবিলম্বে এই ‘হয়রানি’ বন্ধ করতে তৃণমূলের ৫ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল কমিশনের সদর দফতরে যাচ্ছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকা নিয়ে এই সংঘাত রাজভবন থেকে দিল্লি পর্যন্ত গড়াতে চলেছে।

Related Posts

© 2026 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy