ভারত ছাড়লেন বাংলাদেশের হাইকমিশনার! দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক কি ছিন্ন হতে চলেছে?

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার কূটনৈতিক টানাপোড়েন এবার এক নতুন মোড় নিল। দিল্লির সঙ্গে সম্পর্কের চরম উত্তেজনার মধ্যেই ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহকে জরুরি ভিত্তিতে ঢাকায় তলব করল ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) রাতে বিদেশ মন্ত্রকের নির্দেশ পাওয়া মাত্রই তিনি দিল্লির দায়িত্ব ছেড়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন এবং রাতেই বাংলাদেশে পৌঁছান।

কূটনৈতিক সূত্রে খবর, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্কের যে অবনতি হয়েছে, তা নিয়ে উচ্চপর্যায়ের শলাপরামর্শ করতেই এই তলব। বিশেষ করে সংখ্যালঘু ইস্যু এবং সীমান্তে উত্তজনা নিয়ে যেভাবে দুই দেশ সরাসরি সংঘাতে জড়িয়েছে, তাতে হাইকমিশনারের এই হঠাৎ স্বদেশ প্রত্যাবর্তন যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা। কূটনৈতিক মহলে জল্পনা ছড়িয়েছে যে, বাংলাদেশ হয়তো ভারতের সঙ্গে তাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের পরিধি কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে। বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সাম্প্রতিক মন্তব্যও এই জল্পনাকে উসকে দিয়েছে।

অন্যদিকে, বাংলাদেশের অন্দরে ইনকিলাব মঞ্চের মতো সংগঠনগুলি ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক পুরোপুরি ছিন্ন করার জন্য সরকারের ওপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করছে। যদিও ইউনূস সরকার এখনই তেমন কোনো চূড়ান্ত পদক্ষেপের ইঙ্গিত দেয়নি, তবে হাইকমিশনারকে জরুরি তলব সেই পথেই কোনো সংকেত কি না, তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।

শেখ হাসিনা ইস্যু থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক ওসমান হাদি ও দীপু দাসের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুই দেশের সীমান্ত এবং রাজনীতি এখন উত্তপ্ত। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলার তথ্য তুলে ধরলে বাংলাদেশ তাকে ‘অতিরঞ্জিত’ বলে খারিজ করে। উল্টে ভারতের ওপর পাল্টা চাপ সৃষ্টি করতে সে দেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার প্রশ্ন তোলে ঢাকা। এছাড়া চোরাচালান ও উস্কানিমূলক মন্তব্য নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় হাইকমিশার তলবের ঘটনা ঘটেছে। মাত্র সাত দিনের ব্যবধানে যেখানে দুইবার ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে ডেকে পাঠিয়েছিল, সেখানে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তড়িঘড়ি দেশে ফিরিয়ে নেওয়া দিল্লির প্রতি ঢাকার কড়া বার্তারই বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করা হচ্ছে।

Related Posts

© 2026 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy