বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও চোরাশিকার রুখতে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করল জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষ। সমগ্র বনাঞ্চল জুড়ে বসানো হচ্ছে অত্যাধুনিক ট্র্যাপ ক্যামেরা নেটওয়ার্ক। আগের তুলনায় নজরদারি আরও নিখুঁত করতে এবার জঙ্গলের প্রতিটি নড়াচড়া রেকর্ড করবে এই হাই-টেক ক্যামেরাগুলি। আধুনিক প্রযুক্তির এই ব্যবহারে জলদাপাড়ার বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কার্যকর নজরদারির সুবিধার্থে গোটা জাতীয় উদ্যানকে ২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের মোট ১০৫টি গ্রিডে ভাগ করা হয়েছে। ভূপ্রকৃতি, বন্যপ্রাণীদের যাতায়াতের পথ এবং মানুষের গতিবিধি বিবেচনা করে এই গ্রিডগুলি নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিটি গ্রিডে বসানো হয়েছে দুটি করে ‘ডাবল-সাইডেড’ ট্র্যাপ ক্যামেরা। ফলে বন্যপ্রাণীরা যে দিক দিয়েই চলাচল করুক না কেন, তাদের ছবি ও ভিডিও এড়িয়ে যাওয়া অসম্ভব। এই তালিকায় রয়েছে অত্যাধুনিক ইনফ্রারেড ট্র্যাপ ক্যামেরা ও হোয়াইট ফ্ল্যাশ ক্যামেরা, যা ঘুটঘুটে অন্ধকার রাতেও নিখুঁত ছবি তুলতে সক্ষম।
জলদাপাড়ার এডিএফও নবীকান্ত ঝাঁ জানান, “এই ট্র্যাপ ক্যামেরা থেকে প্রাপ্ত তথ্য বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে অত্যন্ত সহায়ক হবে। এর মাধ্যমে বিভিন্ন প্রজাতির সংখ্যা, তাদের বিচরণের ধরন এবং আবাস সম্পর্কে আমরা স্পষ্ট ধারণা পাব।” বন দফতর আরও জানিয়েছে, সংবেদনশীল এলাকাগুলিতে ইতিমধ্যে ক্যামেরা স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং আরও নতুন ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এই ডিজিটাল নজরদারি শুধু পশুদের গতিবিধি নয়, জঙ্গলে অনুপ্রবেশকারী চোরাশিকারিদের চিহ্নিত করতেও বড় অস্ত্র হয়ে উঠবে।