একদিকে নার্সিংহোমের বেডে অসুস্থ মেয়ের জীবনযুদ্ধ, অন্যদিকে ভোটার তালিকা সংশোধনের (SIR) কড়া ডেডলাইন— এই দুইয়ের সাঁড়াশি চাপে পড়েও কর্তব্য থেকে বিচ্যুত হননি পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার অতনু জানা। বিজয়া রামচক এলাকার ১৭২ নম্বর বুথের বিএলও (BLO) অতনু বাবুর এই নিষ্ঠা দেখে অভিভূত জেলার মানুষ। কদিন আগেই ভোটারদের একাংশের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে, কিন্তু আজ তাঁর ছবিই সমাজমাধ্যমে প্রশংসিত হচ্ছে।
বর্তমানে পাঁশকুড়ার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন অতনু বাবুর মেয়ে। বাবার মন পড়ে রয়েছে মেয়ের শারীরিক অবস্থার দিকে, কিন্তু হাতে জমে থাকা এসআইআর-এর পাহাড় প্রমাণ কাজ ফেলে রাখার উপায় নেই। অগত্যা নার্সিংহোমের ওয়ার্ডেই ল্যাপটপ আর নথিপত্র নিয়ে বসে পড়েছেন তিনি। মেয়ের শয্যাপাশে বসেই নিখুঁতভাবে ভোটার তালিকার নাম বাদ দেওয়া বা সংশোধনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
অতনু বাবু জানান, কাজের চাপে ব্যক্তিগত জীবন কার্যত বিপন্ন। তিনি বলেন, “বিহারে যেমন অ্যাসিস্ট্যান্ট বিএলও থাকে, আমাদের এখানেও তেমন ব্যবস্থা থাকলে এই অমানুষিক চাপ থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া যেত। পরিবারের সংকটেও ছুটি নেওয়ার জো নেই।” তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, রাজ্য সরকার কর্মীদের ওপর বাড়তি বোঝা চাপাচ্ছে। অন্যদিকে, তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের দাবি, এটিই সরকারি কর্মীর প্রকৃত দায়বদ্ধতা। বিতর্ক চললেও, মেয়ের অসুস্থতাকে সঙ্গী করে অতনু বাবুর এই কর্তব্যপরায়ণতা বর্তমানে জেলার চর্চার কেন্দ্রবিন্দু।