চুঁচুড়া-মগড়া ব্লক অফিসে সোমবার সকালে এসআইআর (SIR) বা ভোটার তালিকা সংশোধনের শুনানিকে কেন্দ্র করে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে গেল। তৃণমূলের বিএলএ-২ (BLA 2)-দের শুনানির ঘরে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে সরাসরি বিডিও অফিসে গিয়ে হম্বিতম্বি শুরু করেন চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার। বিডিও-র সঙ্গে তীব্র কথা কাটাকাটির পর কার্যত গায়ের জোরে শুনানি বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তাঁর বিরুদ্ধে।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার সকালে। তৃণমূলের বিএলএ-২ প্রতিনিধিরা শুনানির ঘরে ঢোকার চেষ্টা করলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী সেখানে তাঁদের থাকার অনুমতি নেই। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছান বিধায়ক অসিত মজুমদার। তিনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির ঘরে বসে সরাসরি বিডিও এবং পরে এসডিও-কে ফোন করে হুঁশিয়ারি দেন। বিধায়ককে বলতে শোনা যায়, “বিএলএ-২ রা কেন থাকতে পারবে না? না ঢুকতে দিলে আমরা শুনানি বন্ধ করে দেব।” অভিযোগ, তাঁর এই অনড় অবস্থানের জেরে বেশ কিছুক্ষণ হিয়ারিং স্থগিত হয়ে যায়।
এই সক্রিয়তার নেপথ্যে রবিবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি ভার্চুয়াল বৈঠকের নির্দেশ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। অভিষেক বিএলএ-দের উদ্দেশে বলেছিলেন, “এখন যুদ্ধের সময়, এক ইঞ্চি জমিও ছাড়বেন না। হিয়ারিংয়েও থাকবেন।” যদিও নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, শুনানিতে শুধুমাত্র মাইক্রো অবজারভার ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের থাকার কথা। কিন্তু তৃণমূল নেতৃত্বের আশঙ্কা, বিএলএ-রা না থাকলে শুনানিতে গড়মিল হতে পারে।
এই ঘটনা নিয়ে বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, “আমি হিয়রিং সেন্টারের ভেতরে ঢুকিনি। সভাপতির ঘরে বসে প্রতিবাদ করেছি। নির্বাচন কমিশন বেআইনি কাজ করছে। কেন বিএলএ-২ ঢুকবে না, তার আইনি নথি দেখাতে বলেছি।” অন্যদিকে, বিজেপি নেতা সজল ঘোষ কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়ে জানিয়েছেন, “এই সাহস ওনার হওয়ার কথা নয়। নিশ্চয়ই নেপথ্যে বড় কোনো উস্কানি রয়েছে। একটা সরকারি নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে এভাবে বন্ধ করা যায় না।” এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হুগলির রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে।