মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে ফের একবার নাটকীয় মোড়! যে কাকা-ভাইপোর রাজনৈতিক লড়াই নিয়ে গোটা দেশ উত্তাল ছিল, সেই শরদ পাওয়ার ও অজিত পাওয়ার আবারও এক মঞ্চে। আসন্ন পিম্পরি-চিঞ্চওয়াড় পুরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখেই এই মেগা জোটের গুঞ্জন এখন তুঙ্গে। বিধানসভা নির্বাচনের সময় যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল, তা কি তবে মিটতে চলেছে? নাকি এটি শুধুই স্থানীয় নির্বাচনের বৈতরণী পার করার বিশেষ কোনো কৌশল? এই প্রশ্নেই এখন সরগরম মারাঠা রাজনীতি।
উল্লেখ্য, মাস কয়েক আগেই শরদ পাওয়ারের নেতৃত্বাধীন এনসিপি-তে বড়সড় ভাঙন ধরিয়ে অজিত পাওয়ার বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন। সেই সময় কাকা ও ভাইপোর রাজনৈতিক বিচ্ছেদ শুধুমাত্র দলের অন্দরে নয়, পাওয়ার পরিবারের অন্দরমহলেও ফাটল ধরিয়েছিল। বিধানসভা নির্বাচনে দুই পক্ষ আলাদাভাবে লড়াই করায় ভোটের ফলাফলেও তার ব্যাপক প্রভাব পড়েছিল। কিন্তু পিম্পরি-চিঞ্চওয়াড় পুরসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ আসতেই সমীকরণ বদলে যেতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই শিল্পাঞ্চল এলাকাটি এনসিপির আদি গড় হিসেবে পরিচিত। এখানে বিরোধীদের কড়া টক্কর দিতে গেলে ঐক্যবদ্ধ লড়াই ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই—এই বাস্তবতাকে মেনেই কাকা-ভাইপো ফের কাছাকাছি এসেছেন।
তবে এই সমঝোতা নিয়ে জল্পনার অন্ত নেই। প্রশ্ন উঠছে, এটি কি শুধুই একটি পুরসভা নির্বাচনের সাময়িক যুদ্ধবিরতি নাকি বড় কোনো রাজনৈতিক পুনর্মিলনের ইঙ্গিত? অজিত পাওয়ার এখনও বিজেপির সঙ্গে তাঁর সমীকরণ স্পষ্ট করেননি, অন্যদিকে শরদ পাওয়ারও পারিবারিক আবেগ বনাম রাজনৈতিক আদর্শের লড়াইয়ে নিজের অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা বজায় রেখেছেন। পিম্পরি-চিঞ্চওয়াড় এলাকায় জয় মানে শুধু পুরবোর্ড দখল নয়, বরং আগামী দিনে মহারাষ্ট্রের মসনদে কার প্রভাব বেশি থাকবে, তা প্রমাণ করা।
দলের অন্দরে অবশ্য এই জোট নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। শরদ শিবিরের একাংশ আদর্শগত বিচ্যুতি নিয়ে শঙ্কিত, আবার অজিত শিবিরের বড় অংশ মনে করছেন কাকার সঙ্গে জোট করলে বিজেপির সঙ্গে তাঁদের সম্পর্কে চিড় ধরতে পারে। সব মিলিয়ে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে এই ‘পাওয়ার গেম’ এখন কোন দিকে মোড় নেয়, সেদিকেই তাকিয়ে গোটা দেশ।