মধ্যপ্রদেশের বহুল চর্চিত ব্যাপম (Vyapam) পরীক্ষা কেলেঙ্কারিতে এক ঐতিহাসিক ও কঠোর রায় দিল ইন্দোরের সিবিআই স্পেশাল কোর্ট। ২০১১ সালের পরীক্ষায় জালিয়াতি এবং ভুয়ো পরীক্ষার্থী সেজে পরীক্ষায় বসার অভিযোগে ১২ জন অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন মাননীয়া বিশেষ বিচারক শুভ্রা সিং। আদালত প্রত্যেককে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক হাজার টাকা করে জরিমানার নির্দেশ দিয়েছে। রায় ঘোষণার পরেই সমস্ত অভিযুক্তকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
সিবিআই-এর বিশেষ আদালতে শুনানির সময় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অকাট্য ও বিশ্বাসযোগ্য তথ্য-প্রমাণ পেশ করে। তদন্তে উঠে আসে যে, ২০১১ সালে ব্যাপম পরিচালিত পরীক্ষায় এই ১২ জন অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে জালিয়াতি চালিয়েছিল। প্রকৃত পরীক্ষার্থীদের পরিবর্তে অর্থের বিনিময়ে অন্য প্রার্থীদের পরীক্ষার আসনে বসানো হয়েছিল। সিবিআই তদন্তে আরও দেখা যায়, এটি কোনও একক ব্যক্তির কাজ ছিল না; বরং পরীক্ষার্থী, ভুয়ো প্রার্থী এবং মধ্যস্থতাকারীদের নিয়ে গঠিত একটি শক্তিশালী চক্র সুসংবদ্ধভাবে এই জালিয়াতি চালিয়েছিল।
বিচারক শুভ্রা সিং তাঁর রায়ে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন যে, এই ধরণের অপরাধ কেবল আইন লঙ্ঘন নয়, বরং হাজার হাজার সৎ ও পরিশ্রমী ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যতের সঙ্গে চূড়ান্ত বিশ্বাসঘাতকতা। আদালত জানিয়েছে, শিক্ষা ও পরীক্ষা ব্যবস্থার পবিত্রতা রক্ষা করা রাষ্ট্রের প্রধান কর্তব্য এবং যারা এই ব্যবস্থার সঙ্গে কারচুপি করবে, তাদের সঙ্গে কোনও আপস করা হবে না।
দোষী সাব্যস্ত হওয়া ১২ জনের মধ্যে চারজন মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা এবং বাকিরা উত্তরপ্রদেশের। তাঁদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি, নথি জাল করা এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মতো ধারায় মামলা প্রমাণিত হয়েছে। আইনি মহলের মতে, সিবিআই আদালতের এই রায় ব্যাপম কেলেঙ্কারির মতো বড় দুর্নীতির তদন্তে একটি বড় মাইলফলক। এই রায় ভবিষ্যতে পরীক্ষা ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা এবং সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে।