নির্বাচনের ডিউটি থেকে বাঁচতে মরিয়া সরকারি কর্মীরা! কেউ পক্ষাঘাতগ্রস্ত তো কারও মধুচন্দ্রিমা, সিইও অফিসে উপচে পড়া ভিড়

শুনানি শুরু হতে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। ভোটারদের কাছে ইতিমধ্যেই বিএলও-দের ফোন যেতে শুরু করেছে। কিন্তু ভোটের গুরুদায়িত্ব কাঁধে নিতে নারাজ খোদ সরকারি কর্মীরাই! শুক্রবার কলকাতার সিইও (CEO) অফিসে মাইক্রো অবজার্ভারদের লম্বা লাইন দেখে চোখ কপালে উঠেছে আধিকারিকদের। কারও নিজের বিয়ে, কারও মেয়ের বিয়ে, আবার কেউ অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ডিউটি থেকে অব্যাহতি চাইছেন। বড়দিনের ছুটির পর অফিস খুলতেই যেন আবেদনের পাহাড় জমেছে কমিশনের দপ্তরে।

আবেদনকারীদের মধ্যে কয়েকজনের পরিস্থিতি অত্যন্ত করুণ। সুদূর ঝাড়গ্রাম থেকে আসা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মী সুব্রত কুমার পাল ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন। জিভের একাংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হওয়ায় তিনি ঠিকমতো কথা বলতে পারেন না, দৃষ্টিশক্তির সমস্যাও প্রকট। অথচ তাকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ইসলামপুরের চোপড়ায়। স্ত্রীর হাত ধরে কমিশনে হাজির হওয়া সুব্রতবাবুর করুণ আর্তি— “এই শারীরিক অবস্থায় ডিউটি করব কী করে?”

অন্যদিকে, ব্যক্তিগত জীবনের গুরুত্বকে প্রাধান্য দিতে দেখা গেল কলকাতার বাসিন্দা অমর্ত্য বসুকে। আগামী জানুয়ারিতেই তাঁর বিয়ে। আগে থেকেই হানিমুনের পরিকল্পনা করা রয়েছে। ফলে মাইক্রো অবজার্ভারের দায়িত্ব পালনে অপারগ তিনি। সটান বিয়ের কার্ড হাতে নিয়ে কমিশনের অফিসে হাজির হয়েছেন তিনি। এছাড়াও হার্টের সমস্যা কিংবা ‘বাড়ি থেকে দূরে ডিউটি নয়’— এমন নানা কারণ নিয়ে ভিড় জমিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের গ্রুপ-বি কর্মীরা।

কমিশন সূত্রে খবর, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যাদের সমস্যা সত্যিই গুরুতর, তাদের হয়তো ছাড় দেওয়া হতে পারে। তবে কমিশন স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, তাদের হাতে পর্যাপ্ত মাইক্রো অবজার্ভার রয়েছে। কিন্তু যদি কেউ স্রেফ ফাঁকি দেওয়ার জন্য মিথ্যে অজুহাত দেখান, তবে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া শোকজ নোটিশ পাঠাতে দ্বিধা করবে না নির্বাচন কমিশন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy