COVID-19 মহামারির স্মৃতি এখনও টাটকা। কিন্তু তার চেয়েও বড় এবং ভয়ংকর এক স্বাস্থ্য সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে ভারত। চিকিৎসকদের আশঙ্কা, উত্তর ভারতে যেভাবে বায়ুদূষণ বাড়ছে, তাতে আগামী দিনে ফুসফুসের রোগ এক ‘সুনামি’র আকার নিতে পারে। ব্রিটেনের লিভারপুলের খ্যাতনামা পালমোনোলজিস্ট ডাঃ মনীশ গৌতম সতর্ক করে জানিয়েছেন, বর্তমানে হাসপাতালে আসা রোগীর সংখ্যা হিমশৈলের চূড়া মাত্র; লক্ষ লক্ষ মানুষের ফুসফুস ইতিমধ্যেই মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।
পরিসংখ্যান বলছে, ডিসেম্বর মাসে দিল্লিতে ফুসফুসের রোগীর সংখ্যা প্রায় ২০-৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে যুবক ও প্রথমবারের মতো অসুস্থ হওয়া রোগীদের ভিড়। ডাঃ গৌতমের মতে, মাথাব্যথা, ক্লান্তি, হালকা কাশি বা গলা ব্যথার মতো উপসর্গগুলিকে সাধারণ ভেবে উপেক্ষা করা হচ্ছে, যা আসলে বড় বিপদের ইঙ্গিত। তিনি অবিলম্বে যক্ষ্মা (TB) নির্মূল কর্মসূচির মতো ফুসফুসের স্বাস্থ্যের জন্য একটি জাতীয় ‘টাস্ক ফোর্স’ গঠনের আর্জি জানিয়েছেন।
দূষণের প্রভাব শুধু ফুসফুসেই সীমাবদ্ধ নেই। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ রাজয় নারায়ণ এবং অধ্যাপক ডেরেক কনোলি জানিয়েছেন, গত এক দশকে বিশ্বজুড়ে হৃদরোগ বাড়ার অন্যতম কারণ বায়ুদূষণ। বাতাসের সূক্ষ্ম কণা (PM2.5) রক্তের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে অলক্ষ্যে হৃৎপিণ্ডের ক্ষতি করছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গডকরিও স্বীকার করেছেন যে, দিল্লির দূষণের প্রায় ৪০ শতাংশ আসে পরিবহন ক্ষেত্র থেকে। যক্ষ্মা বা অন্যান্য সংক্রামক ব্যাধির মতো দূষণজনিত রোগ নিয়ন্ত্রণে এখন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সচেতনতা ও চিকিৎসা পরিকাঠামো গড়ে তোলা প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।