আজকের সকাল থেকেই ট্রেনযাত্রা সাধারণ মানুষের জন্য আরও কিছুটা ব্যয়বহুল হয়ে উঠল। দেশজুড়ে কার্যকর হয়েছে ভারতীয় রেলের নতুন ভাড়া কাঠামো। জাতীয় স্তরে এই ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্তে আরও একবার মধ্যবিত্তের পকেটে চাপ বাড়ল। উল্লেখ্য, গত ছয় মাসের ব্যবধানে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার রেলভাড়া বৃদ্ধি করল কেন্দ্র। এর আগে চলতি বছরের জুলাই মাসেও একবার ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল।
রেল মন্ত্রকের তথ্য বলছে, জুলাই মাসের সেই ভাড়া বৃদ্ধির জেরে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় হয়েছিল। এবার নতুন ভাড়া কাঠামো কার্যকর হওয়ার ফলে ২০২৬ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত রেলের কোষাগারে আরও প্রায় ৬০০ কোটি টাকা জমা হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
কোন শ্রেণিতে কত বাড়ল ভাড়া? রেলের নয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী ভাড়ার অঙ্ক এক নজরে দেখে নিন:
অর্ডিনারি ক্লাস (২১৫ কিমি-র বেশি দূরত্বে): প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া বেড়েছে ১ পয়সা।
মেল/এক্সপ্রেস নন-এসি ট্রেন: প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া বেড়েছে ২ পয়সা।
এসি শ্রেণি (সমস্ত এসি কোচ): এখানেও প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে ২ পয়সা।
রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, এই বৃদ্ধি অত্যন্ত সামান্য। উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনো যাত্রী নন-এসি কোচে ৫০০ কিলোমিটার যাত্রা করেন, তবে তাঁকে আগের থেকে মাত্র ১০ টাকা বেশি দিতে হবে।
কাদের জন্য স্বস্তির খবর? সব ক্ষেত্রে কিন্তু ভাড়া বাড়েনি। শহরতলির ট্রেনের (Local Train) মাসিক সিজন টিকিট বা মান্থলি-র ভাড়ায় কোনো পরিবর্তন করা হয়নি। এছাড়া অর্ডিনারি ক্লাসে ২১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত যাত্রার ক্ষেত্রেও পুরনো ভাড়াই বহাল থাকছে।
কেন এই ভাড়া বৃদ্ধি? ভাড়া বৃদ্ধির স্বপক্ষে রেল মন্ত্রক জানিয়েছে, গত এক দশকে রেলের নেটওয়ার্ক ও পরিকাঠামো বহুগুণ বেড়েছে। বর্তমানে রেলের মানবসম্পদ বাবদ খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া পেনশন বাবদ খরচ ৬০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে রেলের মোট অপারেশনাল খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ লক্ষ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। এই বিশাল ব্যভার সামাল দিতেই ‘ভাড়া র্যাশনালাইজেশন’ বা যুক্তিসঙ্গত পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। পাশাপাশি যাত্রী নিরাপত্তা ও আধুনিকীকরণে বড়সড় বিনিয়োগের কারণেই এই পদক্ষেপ নিতে হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।