বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর চলা লাগাতার অত্যাচারের ইস্যুতে এবার সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে কাঠগড়ায় তুলল তৃণমূল কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের মন্ত্রী ডা. শশী পাঁজা দাবি করেন, প্রতিবেশী দেশে হিন্দুদের ওপর হওয়া নৃশংসতা নিয়ে কেন্দ্র সরকার রহস্যজনকভাবে নীরব। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেন এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বা বিদেশ মন্ত্রক কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে না?
তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপি যে ‘নীরবতার’ অভিযোগ তুলছিল, তার পাল্টা জবাব দিয়ে শশী পাঁজা বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস সবসময় বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ভাই-বোনদের পাশে আছে। সম্প্রতি দীপু চন্দ্র দাসের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।” তিনি অভিযোগ করেন, বিজেপি রাজ্যজুড়ে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে যে তৃণমূল এই বিষয়ে কথা বলছে না। মন্ত্রীর পালটা তোপ, “বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে যখন বাঙালিদের ওপর হামলা হয়, তখন মোদী-শাহরা কোথায় থাকেন?”
এই প্রসঙ্গেই ওড়িশার সম্বলপুরে এক পরিযায়ী বাঙালি শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন শশী পাঁজা। তাঁর অভিযোগ, মুর্শিদাবাদের সুতি ব্লকের তিন যুবককে ওড়িশায় ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে আক্রমণ করা হয়েছে, কারণ তাঁরা বাংলায় কথা বলছিলেন। এই হামলায় একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং দু’জন গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন। তৃণমূলের দাবি, হিন্দি বলয়ের কয়েকটি রাজ্যে বাংলাভাষীদের ‘বাংলাদেশি’ অপবাদ দিয়ে টার্গেট করা হচ্ছে।
তবে ওড়িশা পুলিশ এই ঘটনার সাম্প্রদায়িক বা জাতিগত তত্ত্ব খারিজ করে দিয়েছে। ওড়িশার আইজিপি (নর্দার্ন রেঞ্জ) হিমাংশু কুমার লাল জানিয়েছেন, সম্বলপুরে ৩০ বছর বয়সী ওই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বিড়ি নিয়ে সামান্য বচসার জেরে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, এই খুনের সঙ্গে মৃত ব্যক্তির বাঙালি বা বাংলাদেশি পরিচয়ের কোনও সম্পর্ক নেই। তবুও রানাঘাটে প্রধানমন্ত্রীর ‘বাঁচতে চাই, বিজেপি তাই’ স্লোগানকে কটাক্ষ করে তৃণমূল প্রশ্ন তুলেছে— তবে কি বিজেপি না করলে সাধারণ মানুষের বাঁচার অধিকার নেই?