বাংলাদেশ ইস্যুতে এবার কেন্দ্র ও রাজ্যের দুই শাসক দলকেই এক বন্ধনীতে রাখলেন সিপিআইএম-এর রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তাঁর সাফ অভিযোগ, বাংলাদেশের ভারতীয় দূতাবাসে হামলা হলেও কেন্দ্রীয় সরকার রহস্যজনকভাবে নীরব। অন্যদিকে, এপার বাংলায় বিজেপি অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করলেও তৃণমূলের পুলিশ-প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ করছে না। সেলিমের দাবি, দুই দলই আসলে ধর্মের রাজনীতি করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চাইছে।
‘বিশ্বগুরু’ এখন ব্ল্যাঙ্ক কেন? বুধবার আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে মুজাফফর আহমেদ ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে মহম্মদ সেলিম বলেন, “বাংলাদেশ প্রসঙ্গে ভারত সরকার পুরো ব্ল্যাঙ্ক। যারা বিশ্বগুরু হতে চেয়েছিল, তারা এখন চুপ কেন? ভারতের হাই কমিশনে হামলা চালানো হলো, অথচ কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে? ওপার বাংলায় যেমন ভারত-বিদ্বেষ বাড়ানো হচ্ছে, এপারের শাসকরাও তেমনি বাংলাদেশি-বিদ্বেষ ছড়িয়ে নিজেদের আখের গুছিয়ে নিচ্ছে।”
ঘৃণার চাষ ও কর্পোরেট সংবাদমাধ্যম: সেলিমের মতে, আফগানিস্তান বা শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি তৈরি করে দক্ষিণপন্থীরা ধর্মের আশ্রয়ে ঘৃণার চাষ করছে। তিনি বলেন, “নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, সাম্প্রদায়িক উন্মাদনায় ঘি ঢালার চেষ্টা হচ্ছে। এই কাজে এক শ্রেণির কর্পোরেট সংবাদমাধ্যমও সামিল।” বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু যুবককে পিটিয়ে পুড়িয়ে মারার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি একে ‘ঘৃণার পরিবেশের ফল’ বলে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি ঢাকা ও বিভিন্ন জেলায় যে বামপন্থী ও উদারমনা মানুষরা এই মৌলবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছেন, তাঁদের অভিবাদন জানান তিনি।
তৃণমূল-আরএসএস আঁতাঁত ও ‘সেটিং’ তত্ত্ব: তৃণমূল ও বিজেপি-র মধ্যে গোপন বোঝাপড়ার অভিযোগ তুলে সেলিম প্রশ্ন তোলেন, “কেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রেফতার হন না? কেন কাকুর কণ্ঠস্বর পাওয়া সত্ত্বেও তদন্ত এগোয় না? আসলে তৃণমূল এমন কোনো কাজ করে না যা আরএসএস-এর গেমপ্ল্যানের বাইরে।” ওয়াকফ ইস্যু থেকে শুরু করে ডায়মন্ড হারবারের ভোট লুঠ— একাধিক বিষয়ে দুই শাসক দলের ‘সেটিং’ নিয়ে আক্রমণ শানান সিপিআইএম নেতা। তাঁর মতে, মানুষের রুটি-রুজির সমস্যা আড়াল করতেই এই ধর্মীয় মেরুকরণের খেলা চলছে।