রেল শহর খড়্গপুরের হিজলি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার মাউন্টেন ভিউ—দূরত্বটা কয়েক হাজার মাইলের হলেও, আবেগের সুতোয় তা এক হয়ে গেল গুগল ও অ্যালফাবেটের সদর দফতরে। আইআইটি খড়্গপুরের (IIT Kharagpur) ৭৫তম বর্ষপূর্তির প্রাক্কালে প্রতিষ্ঠানের কৃতি ছাত্র তথা বর্তমান গুগল সিইও সুন্দর পিচাইয়ের (Sundar Pichai) সঙ্গে দেখা করলেন ডিরেক্টর অধ্যাপক সুমন চক্রবর্তী। এই ঐতিহাসিক সাক্ষাৎ আগামী দিনে প্রযুক্তি ও শিক্ষা ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আমেরিকার গুগল সদর দফতরে এই বৈঠকে অধ্যাপক চক্রবর্তীর সঙ্গে ছিলেন আইআইটি খড়্গপুরের একগুচ্ছ বিশিষ্ট প্রাক্তনী প্রতিনিধিদল। সুন্দর পিচাইয়ের সঙ্গে আলোচনায় উঠে আসে অত্যাধুনিক গবেষণা, উদ্ভাবন এবং বিশ্বমানের প্রযুক্তির প্রসারের কথা। শুধু পেশাদার আলোচনা নয়, আবেগঘন মুহূর্তও ধরা পড়ে এই সাক্ষাতে। সুন্দর পিচাই খড়্গপুর আইআইটিতে কাটানো তাঁর ছাত্রজীবনের সোনালী দিনগুলি এবং স্ত্রী অঞ্জলি পিচাইয়ের সঙ্গে কাটানো নানা অভিজ্ঞতার কথা স্মৃতিচারণ করেন। এই চিরন্তন বন্ধনই যেন আবারও প্রমাণ করল, খড়্গপুরের মাটি থেকেই বিশ্ব জয়ের স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলেন তিনি।
বৈঠকের সবথেকে বড় চমক হলো, সুন্দর পিচাই আগামী বছর আইআইটি খড়্গপুরের ৭৫তম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন। খড়্গপুর ক্যাম্পাসে বিশ্ববিখ্যাত এই টেক-জায়ান্টের পদধূলি পড়া এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা। শুধু তাই নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আইআইটি খড়্গপুরের একটি ‘গ্লোবাল আউটরিচ সেন্টার’ স্থাপনের বিষয়েও সুন্দর পিচাই সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এই কেন্দ্রের লক্ষ্য হবে আন্তর্জাতিক স্তরে গবেষণা, নতুন উদ্যোগ বা স্টার্টআপ এবং প্রযুক্তি-চালিত সামাজিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করা।
অধ্যাপক সুমন চক্রবর্তী এই সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে বলেন, “আইআইটি খড়্গপুরের ৭৫ বছরের গৌরবময় ঐতিহ্য আজ বিশ্ববিখ্যাত উদ্ভাবনের সঙ্গে মিলেছে। সুন্দর পিচাইয়ের নেতৃত্ব সেই গৌরবেরই এক উজ্জ্বল প্রতিফলন।” প্রাক্তনীর হাত ধরেই এবার আইআইটি খড়্গপুর বিশ্বমঞ্চে আরও বড় ভূমিকা নিতে চলেছে, যা ভারতের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে এক বড় মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হবে।