‘মন্দের ভালো’ না কি বড় চ্যালেঞ্জ? ১৭ বছরের নির্বাসন শেষে তারেক কি পারবেন ভারতের সঙ্গে বরফ গলাতে?

বাংলাদেশের রাজনীতি যখন আগ্নেয়গিরির মুখে দাঁড়িয়ে, ঠিক তখনই ১৭ বছরের স্বেচ্ছা নির্বাসন কাটিয়ে বীরের বেশে ঢাকায় ফিরছেন বিএনপি-র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সপরিবারে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে বিমানে ওঠার পর থেকেই শুধু বাংলাদেশ নয়, দিল্লির সাউথ ব্লকেও শুরু হয়েছে তীব্র জল্পনা। ২০২৬-এর ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের আগে তারেকের এই ফেরা দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে এক নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

দিল্লির জন্য কঠিন ধাঁধা: শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের পারদ বর্তমানে তলানিতে। ভারতের উদ্বেগ বাড়িয়ে বর্তমানে বাংলাদেশে মাথা চাড়া দিয়েছে কট্টরপন্থী জামাত-ই-ইসলামি এবং এনসিপি-র মতো নতুন ভারত-বিরোধী শক্তি। এই পরিস্থিতিতে দিল্লির কাছে প্রশ্ন— জামাতপন্থীদের তুলনায় বিএনপি-কে সামলানো কি সহজ হবে? অতীতে বিএনপি-র ভারত-বিরোধী মনোভাব সর্বজনবিদিত। বিশেষ করে তিস্তা জলচুক্তি নিয়ে তারেক রহমানের অবস্থান ভারতের জন্য খুব একটা সুখকর ছিল না।

কিঞ্চিত আশার আলো: তবে সবটাই যে নেতিবাচক, তা নয়। হাসিনা সরকারের পতনের পর তারেক রহমানের একটি বার্তা ভারতকে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে। তিনি বলেছিলেন, ‘না দিল্লি, না পিণ্ডি (রাওয়ালপিণ্ডি), সবার আগে বাংলাদেশ।’ ভারতের কূটনৈতিক মহলের মতে, বিএনপি অন্তত জামাত বা ইউনূসদের মতো কট্টর পাকিস্তানপন্থী না হয়ে যদি ভারসাম্য বজায় রাখে, তবে তা ভারতের জন্য ‘মন্দের ভালো’ হতে পারে।

তারেকের চ্যালেঞ্জ: ২০০৭-০৮ সালে দুর্নীতির মামলায় জড়িয়ে দেশ ছাড়তে হয়েছিল তারেককে। আজ ১৭ বছর পর যখন তিনি ফিরছেন, তখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা। মা খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে। এই অবস্থায় দলের ব্যাটন এখন পুরোপুরি তাঁর হাতে। জামাতরা যখন সারা দেশে প্রভাব বিস্তার করছে, তখন তারেক রহমান কতটা হিংসা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন এবং ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সদ্ভাব বজায় রাখেন, সেটাই এখন দেখার।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy