দিল্লিতে গত কয়েক সপ্তাহের দমবন্ধ করা পরিস্থিতি থেকে অবশেষে মিলেছে সামান্য মুক্তি। বায়ুদূষণের মাত্রা কিছুটা হ্রাস পাওয়ায় দিল্লি ও সংলগ্ন এনসিআর (NCR) এলাকা থেকে ‘গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান’ বা GRAP-এর চতুর্থ ধাপের (GRAP-iv) কঠোর বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) জানিয়েছে, বাতাসের গুণমান সূচক বা AQI ‘অতি গুরুতর’ (Severe+) পর্যায় থেকে নেমে ‘খুব খারাপ’ (Very Poor) পর্যায়ে আসায় এই স্বস্তি দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
উল্লেখ্য, যখন দিল্লির বাতাসের মান ৪৫০-এর মাত্রা ছাড়িয়ে যায়, তখনই GRAP-iv-এর অধীনে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বিধিনিষেধ জারি করা হয়। এর ফলে দিল্লিতে ডিজেল চালিত ভারী ট্রাকের প্রবেশ বন্ধ ছিল, নির্মাণকাজে ছিল সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা এবং স্কুল-কলেজও বন্ধ রাখতে হয়েছিল। বাতাসের গতি বৃদ্ধি এবং সাম্প্রতিক আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে কুয়াশা ও ধোঁয়াশার চাদর কিছুটা আলগা হয়েছে, যা দূষণ কমাতে সহায়ক হয়েছে।
GRAP-iv প্রত্যাহারের ফলে সবচেয়ে বড় স্বস্তি মিলেছে নির্মাণ শ্রমিকদের মধ্যে। কাজ বন্ধ থাকায় যারা চরম আর্থিক সংকটে পড়েছিলেন, তারা পুনরায় কাজে ফিরতে পারছেন। পাশাপাশি, শিল্প কারখানাগুলিও সীমিত পরিসরে তাদের উৎপাদন শুরু করার অনুমতি পেয়েছে। তবে প্রশাসন সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে, চতুর্থ ধাপের নিয়ম উঠলেও GRAP-এর আগের ধাপের (১, ২ ও ৩) কিছু নিয়ন্ত্রণবিধি বজায় থাকবে। ধুলো নিয়ন্ত্রণ না করলে বা পরিবেশ বিধি লঙ্ঘন করলে কড়া জরিমানার বিধানও রাখা হয়েছে।
চিকিৎসকরা অবশ্য এখনই সম্পূর্ণ নিশ্চিন্ত হতে বারণ করছেন। তাঁদের মতে, দূষণ কমলেও বাতাস এখনও স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকির। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। দিল্লির এই পরিস্থিতি আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল যে, পরিবেশ রক্ষা না করলে জীবনযাত্রা কতটা স্থবির হয়ে পড়তে পারে।