মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জে চাঞ্চল্যকর পিতা-পুত্র খুনের ঘটনায় ঐতিহাসিক রায় দিল আদালত। মঙ্গলবার জঙ্গিপুর মহকুমা আদালতের বিচারক অমিতাভ মুখোপাধ্যায় অভিযুক্ত ১৩ জনকেই দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। কারাদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে ১৫ লক্ষ টাকা করে জরিমানারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এই রায়ে একেবারেই সন্তুষ্ট নয় নিহতের পরিবার ও বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী।
আদালতের রায় এবং সাজার বহর
গত ১২ এপ্রিল সামশেরগঞ্জের জাফরাবাদ গ্রামে নৃশংসভাবে খুন হয়েছিলেন হরগোবিন্দ দাস ও তাঁর পুত্র চন্দন দাস। পুলিশি তদন্ত ও ৫৫ দিনের মাথায় জমা পড়া চার্জশিটের ভিত্তিতে আদালত এই রায় ঘোষণা করে।
-
যাদের সাজা হলো: দিলদার নাদাব, আসামুল নাদাব, ইঞ্জামুল হক, জিয়াউল হক, ফেখারুল শেখ, আজফারুল শেখ, মুনিরুল শেখ, ইকবাল শেখ, নুরুল শেখ, সাবা করিম, হজরত শেখ, আকবর আলি ও ইউসুফ শেখ।
“পুলিশের চার্জশিটে গলদ”, বিস্ফোরক শুভেন্দু
আদালতের রায় ঘোষণার পরেই মৃত চন্দন দাসের মাকে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি সরাসরি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। শুভেন্দুর দাবি:
“পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে চার্জশিট দুর্বল করেছে, যাতে দোষীদের ফাঁসি না হয়। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে যাব। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে ফাঁসিই একমাত্র সাজা হওয়া উচিত ছিল।”
কান্নায় ভেঙে পড়ে নিহতের মা সাংবাদিকদের বলেন, “আমার স্বামী আর ছেলেকে চোখের সামনে কুপিয়ে মারা হয়েছে। আমি ওদের ফাঁসি চাই।”
ফিরে দেখা সেই অভিশপ্ত রাত
সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যেই গত ১২ এপ্রিল ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে হরগোবিন্দ ও চন্দন দাসের ওপর হামলা চালানো হয়। অভিযোগ ওঠে, পূর্বপরিকল্পিতভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে তাঁদের। ঘটনার ৬ মাস পর আদালত রায় দিলেও, ‘ন্যায়বিচার’ অধরা বলেই মনে করছে নিহতের পরিবার।