ডায়াবেটিস ধরা পড়লে খাদ্যতালিকা নিয়ে দুশ্চিন্তা হওয়া স্বাভাবিক। মিষ্টিজাতীয় খাবার একেবারে বাদ দেওয়ার পাশাপাশি আরও অনেক পছন্দের খাবার খাওয়া নিয়ে মনে তৈরি হয় হাজারো প্রশ্ন। ডায়াবেটিস মানেই যেন পছন্দের খাবারের উপর একরাশ নিষেধাজ্ঞা। তবে চিকিৎসকেরা বলছেন, কিছু স্বাস্থ্যকর ও মুখরোচক খাবার পরিমিত পরিমাণে ডায়াবেটিস রোগীরাও গ্রহণ করতে পারেন। ওয়েব এমডি ডট কমের তথ্য অনুযায়ী, সেইরকম কয়েকটি খাবারের তালিকা নিচে দেওয়া হলো:
বাদাম দুধ:
অনেকের কাছে শুধু দুধ পান করা একঘেয়ে লাগতে পারে, আবার সুগারের ভয়ে চিনি মেশানোও সম্ভব হয় না। তাদের জন্য বাদাম দুধ হতে পারে একটি স্বাস্থ্যকর বিকল্প। এটি যেমন শরীরে বাড়তি ভিটামিন যোগ করে, তেমনই এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতেও সহায়ক।
বাদামের রুটি:
বাদাম এবং বিভিন্ন প্রকার বীজ স্বাস্থ্যকর চর্বি ও প্রোটিনের উৎস। এগুলিতে শর্করার পরিমাণ কম থাকায় রক্তে শর্করার মাত্রা খুব বেশি বাড়ায় না। বাদামের রুটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর বিকল্প হতে পারে, যা সুগার নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে।
তাজা চর্বিহীন মাংস:
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য প্রক্রিয়াজাত বা লাল মাংসের পরিবর্তে তাজা মাছ অথবা চর্বিবিহীন মাংস খাওয়া উপকারী। এগুলিতে ক্যালোরি ও চর্বির পরিমাণ কম থাকে, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক এবং হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যও ভালো রাখে।
নারকেল-লেবু জল:
ফলের রসে সাধারণত চিনির পরিমাণ বেশি থাকে, তাই ডায়াবেটিস রোগীদের ফল কম পরিমাণে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে এর পরিবর্তে পানীয় হিসেবে নারকেল জল বা লেবুর জল শরীরের তরলের চাহিদা মেটাতে পারে। ডাবের জল শরীরে পটাসিয়াম ও সোডিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করে।
মিঠাই বল:
স্বাস্থ্যকর উপাদান দিয়ে তৈরি এই ছোট আকারের বলগুলি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি মুখরোচক খাবার হতে পারে। এগুলিতে ফাইবার এবং প্রোটিন পাওয়া যায়। চিনি কম পরিমাণে ব্যবহার করে অথবা কৃত্রিম চিনি ব্যবহার করে এটি বাড়িতেই তৈরি করা সম্ভব। কোকো পাউডার, আখরোট বা বাদাম, খেজুরের পেস্ট এবং ভ্যানিলা এসেন্স মিশিয়ে ছোট ছোট ফুড বল তৈরি করে উপভোগ করা যেতে পারে।
সুতরাং, ডায়াবেটিস মানেই খাবারের উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা নয়। সঠিক খাবার নির্বাচন এবং পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করে ডায়াবেটিস রোগীরাও একটি স্বাস্থ্যকর ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন। তবে যেকোনো নতুন খাবার ডায়েটে যোগ করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।