প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে নতুন করে ছড়িয়ে পড়া ভয়াবহ দাঙ্গার আঁচ এবার পৌঁছাল ভারতের রাজধানীতে। ছাত্রনেতা ওসমান বিন হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ওপার বাংলায় চলা নজিরবিহীন নৈরাজ্য এবং ভারতীয় হাই কমিশনের বাইরে বিক্ষোভের জেরে সতর্ক অবস্থানে নয়াদিল্লি। শুক্রবার জরুরি ভিত্তিতে দিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাই কমিশনের নিরাপত্তা বহুগুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
ঢাকার বুকে ‘ব্ল্যাক থার্সডে’: কী কী ঘটল?
বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ঢাকা কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। কট্টরপন্থীদের তাণ্ডবে তছনছ হয়ে গিয়েছে বাংলাদেশের একাধিক গর্বের প্রতিষ্ঠান:
-
ছায়ানটে বর্বরতা: ধানমন্ডির ঐতিহ্যবাহী ছায়ানট ভবনে রাত ১টা নাগাদ হামলা চালায় উন্মত্ত জনতা। বাদ্যযন্ত্র, চেয়ার-টেবিল ভাঙচুরের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠাতা সন্জীদা খাতুন ও মরমী কবি লালন শাহের ছবি ছিঁড়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
-
সংবাদমাধ্যমে আঘাত: দেশের প্রথম সারির দুই সংবাদপত্র— ‘প্রথম আলো’ এবং ‘দ্য ডেইলি স্টার’ দপ্তরে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
-
শাহবাগে বিক্ষোভ: শুক্রবার সকাল থেকেই শাহবাগ চত্বর অবরোধ করে বিক্ষোভ চলছে। কোনো ব্যানার ছাড়াই জমায়েত হওয়া শয়ে শয়ে মানুষের মুখে এখন একটাই স্লোগান— “তুমি কে আমি কে, হাদি হাদি” এবং “এই মুহূর্তে দরকার, বিপ্লবী সরকার।”
ময়মনসিংহে শিউরে ওঠা নৃশংসতা
ওপার বাংলার পরিস্থিতি যে কতটা বিভীষিকাময় হয়ে উঠেছে, তার প্রমাণ মিলেছে ময়মনসিংহে। অভিযোগ উঠেছে, এক হিন্দু যুবককে পিটিয়ে খুনের পর তাঁর দেহ গাছে উল্টো করে ঝুলিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে উগ্রপন্থীরা। এই ঘটনার ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে।
দিল্লিতে কড়া পাহারা: কেন এই পদক্ষেপ?
বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় হাই কমিশনের বাইরে ভারত-বিরোধী বিক্ষোভ ক্রমশ দানা বাঁধছে। এই পরিস্থিতিতে পাল্টা প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় এবং চাণক্যপুরীর কূটনৈতিক এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে দিল্লি পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী বাংলাদেশ দূতাবাসের চারপাশ ঘিরে ফেলেছে। ব্যারিকেড দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে যান চলাচল।
এক নজরে বাংলাদেশের পরিস্থিতি:
-
নিরাপত্তা: ঢাকা জুড়ে সেনাবাহিনী ও বিজিবি টহল দিচ্ছে।
-
আক্রান্ত: সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়, মুক্তমনা সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা।
-
দাবি: হাদি খুনের বিচার এবং বিপ্লবী সরকার গঠন।