ভোটার লিস্টে নাম নেই? শুরু হচ্ছে বড় ‘হিয়ারিং’, বাড়ি বাড়ি নোটিস পাঠাবে কমিশন!

পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকা সংশোধন বা SIR (Strategic Information Report) নিয়ে বড় পদক্ষেপ করল নির্বাচন কমিশন। খসড়া তালিকা থেকে প্রায় ৫৮ লক্ষ নাম বাদ পড়ার পর এবার শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় ধাপ— অর্থাৎ শুনানি বা হিয়ারিং পর্ব। ভোটারদের বাড়িতে নোটিস পাঠানোর প্রক্রিয়া বৃহস্পতিবার শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, বিশেষ কারণে তা পিছিয়ে শুক্রবার থেকে শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

কেন নোটিস পাঠাতে দেরি?

কমিশন সূত্রে খবর, শুনানির নোটিসগুলো ইংরেজি ভাষায় তৈরি ছিল। গ্রামীণ এলাকার সাধারণ মানুষের বোঝার সুবিধার্থে কমিশন সেই নোটিসগুলো আঞ্চলিক ভাষায় অনুবাদ করার সিদ্ধান্ত নেয়। এই অনুবাদের কাজের জন্যই একদিন দেরি হয়েছে। ২২ বা ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি নোটিস পাঠানোর কাজ চলবে।

কারা ডাক পাবেন এই শুনানিতে?

কমিশন স্পষ্ট জানিয়েছে, মূলত দুই ধরনের ভোটারকে শুনানির জন্য ডাকা হবে:

  • নো ম্যাপিং তালিকা: প্রায় ৩০ লক্ষ ভোটার ২০০২ সালের তালিকার সঙ্গে নিজেদের যোগসূত্র দেখাতে পারেননি। এদের প্রত্যেককেই শুনানির মাধ্যমে পরিচয় যাচাই করতে হবে।

  • সন্দেহভাজন তালিকা: প্রায় ১ লক্ষ ৩৬ হাজার ভোটারকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে কমিশন। এদের বয়স, লিঙ্গ বা নামের বানানে বড়সড় গরমিল পাওয়া গিয়েছে। আজ শুক্রবার থেকে মূলত ‘নো ম্যাপিং’ তালিকাভুক্তদেরই প্রথম দফায় ডাকা শুরু হচ্ছে।

শুনানির দিনক্ষণ ও স্থান: এক নজরে নিয়মাবলী

ভোটারদের সুবিধার্থে জেলা প্রশাসনগুলোকে ৬ দফা নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে:

  • নোটিস প্রাপ্তি: বিএলও (BLO)-রা বাড়ি বাড়ি গিয়ে নোটিস বা সমন পৌঁছে দেবেন। এছাড়া রেজিস্টার্ড মোবাইলে এসএমএস-এর মাধ্যমেও জানানো হবে।

  • সময়সীমা: নোটিস পাওয়ার পর শুনানিতে যাওয়ার জন্য ভোটাররা অন্তত এক সপ্তাহ সময় পাবেন। ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই প্রক্রিয়া।

  • স্থান: সংশ্লিষ্ট জেলাশাসক (DM), মহকুমা শাসক (SDO) বা বিডিও (BDO) অফিসে শুনানি হবে। প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১০০ জনের শুনানি হবে।

  • অনুপস্থিতি: যদি কেউ বিশেষ কারণে নির্দিষ্ট দিনে উপস্থিত হতে না পারেন, তবে উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে দিনক্ষণ পরিবর্তনের আবেদন করতে পারবেন।

ভোটারদের করণীয়:

নোটিসে দুটি কপি থাকবে। একটি আপনার কাছে থাকবে, অন্যটিতে সই করে বিএলও-কে ফেরত দিতে হবে। শুনানির সময় নির্দিষ্ট নথিপত্রসহ (যেগুলো নোটিসে উল্লেখ থাকবে) হাজির থাকতে হবে এআরও (ARO) বা এএআরও (AERO)-র সামনে।

রাজ্যের প্রায় ৫৮ লক্ষ মানুষের নাম খসড়া তালিকা থেকে বাদ যাওয়ায় এই শুনানি পর্বটি অত্যন্ত সংবেদনশীল। তালিকায় নাম তোলা বা তথ্য সংশোধনের জন্য এটিই ভোটারদের কাছে শেষ বড় সুযোগ।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy