BigNews: হাইকোর্টের নির্দেশে ৩১৩ শিক্ষকের চাকরি বাতিল, প্রতিবাদে সব স্কুলে পড়লো তালা!

সমতলের নিয়োগ দুর্নীতির ছায়া এবার পাহাড়েও। কলকাতা হাইকোর্টের ঐতিহাসিক রায়ে এক ধাক্কায় চাকরি হারালেন জিটিএ (GTA) এলাকার ৩১৩ জন শিক্ষক। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর পর্যবেক্ষণ, এই নিয়োগ প্রক্রিয়া ছিল সম্পূর্ণ ‘বেআইনি’। আর আদালতের এই কড়া পদক্ষেপের প্রতিবাদেই বৃহস্পতিবার থেকে পাহাড়ের সমস্ত স্কুল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার ডাক দিয়েছে শিক্ষক সংগঠনগুলি।

কেন এই কঠোর নির্দেশ? অভিযোগ উঠেছে, ১৯৯৯ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে পাহাড়ের বিভিন্ন স্কুলে ৭০০-র বেশি শিক্ষককে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে বিনয় তামাং ও অনীত থাপার আমলে কোনো রকম বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই তাঁদের নিয়মিত করা হয়। নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এই নিয়োগে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যদের নামও জড়িয়েছে। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু দীর্ঘ শুনানির পর জানান, শিক্ষকতার মতো পেশায় এমন বেআইনি নিয়োগ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

সিআইডি তদন্তে ফাঁস দুর্নীতি: আদালতের নির্দেশে তদন্ত চালিয়ে সিআইডি (CID) জানায়, প্রাথমিক তদন্তে ৩১৩ জনের নিয়োগে স্পষ্ট দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে। পাহাড়ের রাজনৈতিক অস্থিরতার অজুহাত দিয়ে এই নিয়োগকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল জিটিএ কর্তৃপক্ষ, কিন্তু হাইকোর্ট সেই যুক্তি পত্রপাঠ খারিজ করে দেয়।

অচলাবস্থার পথে পাহাড়ের শিক্ষা: আদালতের রায়ের পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছে পাহাড়ের ‘সংযুক্ত মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠন’। সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ খারকা জানিয়েছেন, দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলার সমস্ত বিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট চলবে। বার্ষিক পরীক্ষা বা ফল প্রকাশ থাকলেও তা স্থগিত রাখা হয়েছে। ফলে শীতের মরসুমের শুরুতেই পাহাড়ের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

অনীত থাপার আশ্বাস: জিটিএ প্রধান অনীত থাপা অবশ্য শিক্ষকদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “আমি কাউকে হতাশ হতে দেব না। ন্যায়বিচারের জন্য প্রয়োজনে উচ্চতর আদালতে যাব।” সব মিলিয়ে বরফ পড়ার মরসুমে পাহাড়ের রাজনীতি এখন শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির উত্তাপে ফুটছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy