শিল-পাটা দিয়ে থেঁতলে খুন,করাত দিয়ে ৬ টুকরো! ইঞ্জিনিয়ার ছেলের নৃশংসতায় স্তম্ভিত পুলিশ!

উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরে ঘটে গেল এক নৃশংস ও হাড়হিম করা ডাবল মার্ডার। নিখোঁজ বৃদ্ধ দম্পতির সন্ধানে নেমে পুলিশ যা জানতে পারল, তা কোনো ভৌতিক সিনেমার চিত্রনাট্যের চেয়ে কম নয়। নিজের জন্মদাতা মা ও বাবাকে খুন করে, তাঁদের দেহ করাত দিয়ে টুকরো করে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁদেরই উচ্চশিক্ষিত ইঞ্জিনিয়ার ছেলেকে।

খুনের নেপথ্যে কী কারণ? পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে পারিবারিক অশান্তির এক দীর্ঘ ইতিহাস। ঘাতক ছেলে অম্বেশ প্রায় পাঁচ বছর আগে এক মুসলিম তরুণীকে বিয়ে করেন। রেলের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী শ্যাম বাহাদুর (৬২) এবং তাঁর স্ত্রী ববিতা (৬০) এই ভিনধর্মী বিয়ে মেনে নিতে পারেননি। এই নিয়ে বাড়িতে অশান্তি লেগেই থাকত। এক পর্যায়ে অম্বেশ ও তাঁর স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ হয় এবং স্ত্রী ৫ লক্ষ টাকা খোরপোশ দাবি করেন।

টাকা নিয়ে বচসা ও শয়তানি বুদ্ধি: গত ৮ ডিসেম্বর সেই ৫ লক্ষ টাকার জন্যই বাবার কাছে হাত পাতেন অম্বেশ। বাবা টাকা দিতে অস্বীকার করতেই শুরু হয় চরম বিবাদ। রাগের মাথায় অম্বেশ প্রথমে রান্নাঘরের ভারী ‘শিল’ দিয়ে মা ববিতাকে আঘাত করেন। বাবা চিৎকার করতে শুরু করলে তাঁকেও পিটিয়ে খুন করেন ওই ইঞ্জিনিয়ার। দুজনেই ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান।

করাত দিয়ে ৬ টুকরো ও নদীতে বিসর্জন: খুন করার পর প্রমাণ লোপাটের জন্য নৃশংসতার সব সীমা ছাড়িয়ে যান অম্বেশ। বাজার থেকে করাত কিনে এনে নিজের বাবা-মায়ের নিথর দেহকে ৬টি টুকরো করেন তিনি। ছোট ছোট বস্তায় সেই দেহাংশ ভরে নিজের গাড়িতে করে ভোরে নদীর জলে ফেলে দিয়ে আসেন।

বোন বন্দনার অভিযোগে ধরা পড়ল অপরাধী: গত ১৩ ডিসেম্বর অম্বেশের বোন বন্দনা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। তিনি জানান, তাঁর বাবা-মা ও ভাইয়ের কোনো হদিশ পাওয়া যাচ্ছে না। অম্বেশ ফোন বন্ধ করে বেশ কয়েকদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকলেও পরে ফিরে আসেন। পুলিশের জেরার মুখে প্রথমে মিথ্যে বললেও পরে ভেঙে পড়েন তিনি এবং নিজের নৃশংস কীর্তির কথা স্বীকার করেন।

উদ্ধার দেহাংশ: ইতিমধ্যেই পুলিশ শ্যাম বাহাদুরের শরীরের একটি অংশ উদ্ধার করেছে। সেই সাথে খুনে ব্যবহৃত করাত ও ভারী শিল-পাটাও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। নদীর বাকি অংশে ডুবুরি নামিয়ে অন্য দেহাংশগুলোর খোঁজ চলছে। উচ্চশিক্ষিত এক যুবকের এমন পৈশাচিকতায় এলাকা জুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy