অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন তাঁর প্রয়াত বাবা, কিংবদন্তি কবি হরিবংশ রাই বচ্চনের (Harivansh Rai Bachchan) প্রতি যে গভীর শ্রদ্ধা ও আবেগ লালন করেন, তা সকলেরই জানা। ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’ (KBC)-এর মঞ্চে একবার তিনি আমির খানের সঙ্গে আলাপচারিতায় বাবার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের এক পুরনো স্মৃতি ভাগ করে নেন, যা শুনে প্রথমে চমক লাগলেও পরে সেই মঞ্চ হাসিতে ভরে ওঠে।
অমিতাভ জানান, জীবনে মাত্র একবার তিনি তাঁর বাবার উদ্দেশে গলা তুলে কথা বলেছিলেন। বহু বছর আগে এক চরম হতাশা ও বিরক্তির মুহূর্তে তিনি বাবাকে সরাসরি জিজ্ঞাসা করে বসেছিলেন, “হুমেঁ আপনে পয়দা কিউঁ কিয়া?” (আপনি আমাকে জন্ম দিয়েছেন কেন?)
সেই রাতে তাঁর বাবা কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। কিন্তু পরের দিন ভোরবেলা, প্রতিদিনের মতো হাঁটতে বেরিয়ে যান হরিবংশ রাই। অমিতাভ ঘুম থেকে উঠে দেখেন, তাঁর বালিশের পাশে ভাঁজ করা একটি কাগজ রাখা। সেই কাগজে লেখা ছিল তাঁর বাবার বিখ্যাত কবিতা, যার শিরোনাম ছিল— ‘নয়ি লিক’ (Nayi Leek)।
কবিতার সেই বুদ্ধিদীপ্ত ও কৌতুকভরা উত্তরটি ছিল:
“জিন্দগি আউর জমানে কি কশমকশ সে ঘাবড়াকার মেরে লড়কে মুঝসে পুঁছতে হ্যায়, হুমেঁ পয়দা কিউঁ কিয়া থা? তুম হি নয়ি লিক ধারনা, আপনে বেটো সে পুছকর উনহেঁ পয়দা করনা।”
যার সারমর্ম: “জীবন আর যুগের এই টানাপড়েনে ঘাবড়ে গিয়ে আমার ছেলে আমাকে জিজ্ঞেস করেছে, আমাকে জন্ম কেন দিয়েছ? তুমি বরং এক নতুন ভাবনা শুরু করো, তোমার ছেলেদের জিজ্ঞেস করে তবেই তাদের জন্ম দিও।”
পরে ২০০৮ সালে নিজের ব্লগে অমিতাভ ব্যাখ্যা দেন, স্কুল শেষ করে কলেজে ঢোকার পর যে স্বাধীনতার অনুভূতি আসে, সেই আদর্শবাদী অস্থিরতা থেকেই তাঁর মনে এই প্রশ্ন জেগেছিল। হরিবংশ রাই বচ্চন ছিলেন ‘মধুশালা’-সহ বহু কালজয়ী কবিতার স্রষ্টা।