১৯৯৬ অলিম্পিকস: কীভাবে ৫ কোটি ডলার খরচ করেও মার্কেটিংয়ে হারল Reebok, জিতল Nike?
নয়াদিল্লি: ১৯৯৬ সালের গ্রীষ্মকাল রিবকের (Reebok) জন্য মুকুটে পালক যুক্ত করার সময় ছিল। কোম্পানিটি আমেরিকার আটলান্টায় অনুষ্ঠিত সেই গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের “অফিসিয়াল অলিম্পিক স্পন্সর” তকমা সুরক্ষিত করার জন্য চোখ কপালে তোলার মতো ৫ কোটি মার্কিন ডলার খরচ করেছিল। তাদের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে এই বিপুল বিনিয়োগের ফলে প্রতিটি সম্প্রচারে, প্রতিটি বিলবোর্ডে এবং প্রতিটি ক্রীড়াবিদের কিটে তাদের লোগোই দৃশ্যমান হবে।
কিন্তু যখন বিশ্ব আটলান্টার অলিম্পিক শিখা প্রজ্জ্বলিত হতে দেখল, তখন ঘটল অপ্রত্যাশিত কিছু। স্টেডিয়ামের ফটকগুলির ঠিক বাইরে নীরবে একটি বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল—যা ছিল এক মার্কেটিং ক্যু (Marketing Coup)। এই কৌশলটি পরে সারা বিশ্বের বিজনেস স্কুলগুলিতে কেস স্টাডি হিসেবে পড়ানো হয়েছিল।
দর্শক মনে নাইকির আধিপত্য
যখন অলিম্পিকের মশাল নিভল, তখন বহু দর্শক গেমসের মাঠ ছাড়লেন এই বিশ্বাস নিয়ে যে, রিবক নয়, বরং নাইকি (Nike)-ই ছিল ইভেন্টটির আসল স্পন্সর।
অফিসিয়াল স্পন্সরশিপের বিপুল অর্থ ব্যয় করা সত্ত্বেও রিবক তার কাঙ্ক্ষিত আধিপত্য তৈরি করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়। এর কারণ ছিল নাইকির সূক্ষ্ম অথচ আক্রমণাত্মক অ্যামবুশ মার্কেটিং (Ambush Marketing) কৌশল:
-
‘নীরব বিদ্রোহ’: নাইকি সরাসরি অলিম্পিকের ভেতরে না ঢুকে স্টেডিয়ামের ঠিক বাইরের জনবহুল এলাকাগুলিকে লক্ষ্য করে বিপুল পরিমাণে বিজ্ঞাপন এবং বিপণন ক্যাম্পেইন চালায়।
-
ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর: তারা এমন অ্যাথলিটদের স্পন্সর করে, যারা তাদের লোগো এবং পণ্যগুলি টিভিতে এমনভাবে প্রদর্শন করেন যে দর্শকদের মনে হয় নাইকিই ইভেন্টটির মূল অংশ।
এই ঘটনাটি বাণিজ্যিক জগতে এক নতুন দিক খুলে দেয়। বিপুল অর্থ খরচ করে অফিসিয়াল স্পন্সরশিপ ট্যাগ কেনাটাই শেষ কথা নয়—শেষ পর্যন্ত ব্র্যান্ডটি গ্রাহক এবং দর্শকদের মনে কতটা প্রভাব ফেলল, সেটাই আসল সাফল্য। ১৯৯৬ সালের এই বিপর্যয় দেখিয়ে দিল যে নাইকির চতুর বিপণন কৌশল রিবকের $৫০ মিলিয়ন বিনিয়োগকে সহজেই টেক্কা দিতে পারে।