খাবার খাওয়ার পর টুথপিক ব্যবহারের অভ্যাস অত্যন্ত পরিচিত হলেও, এটি আপনার মুখের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর বিপদ ডেকে আনতে পারে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন যে কাঠ বা প্লাস্টিকের টুথপিকের ভুল পদ্ধতি বা অতিরিক্ত ব্যবহার মাড়ি ও দাঁতের জন্য ক্ষতিকর।
টুথপিক সাধারণত সহজে উপলব্ধ এবং দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা কণাগুলি দ্রুত সরানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। তবে এই দ্রুত সমাধানের আড়ালেই লুকিয়ে থাকে একাধিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি।
⚠️ টুথপিক ব্যবহারের ৪টি প্রধান বিপদ:
অত্যন্ত জরুরি না হলে টুথপিক ব্যবহার এড়িয়ে চলা উচিত। এর নিয়মিত ব্যবহারে যে চারটি প্রধান সমস্যা দেখা দিতে পারে, তা হল:
১. মাড়ির ক্ষতি: টুথপিক ধারাল হওয়ায় ঘন ঘন ব্যবহার বা জোরে খোঁচা লাগলে মাড়িতে আঘাত লাগতে পারে। এর ফলে মাড়ির কোষ দুর্বল হয়ে যায় এবং মাড়ি ক্ষয়ে যেতে শুরু করে। মাড়ি একবার ক্ষয়ে গেলে তা সহজে আগের অবস্থায় ফেরে না।
২. দাঁতের ফাঁক বড় হওয়া: টুথপিক নিয়মিত ব্যবহার করলে দাঁত দু’টির মধ্যেকার প্রাকৃতিক সংযোগ আলগা হয়ে যায়, যার ফলে দাঁতের ফাঁক ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। এতে আরও বেশি খাবার কণা জমা হয়, যা একটি ক্ষতিকর চক্র তৈরি করে।
৩. টুথপিক ভেঙে যাওয়া ও সংক্রমণ: কাঠের টুথপিক ভেঙে মাড়ির নিচে আটকে গেলে দীর্ঘস্থায়ী অস্বস্তি হতে পারে। এই সূক্ষ্ম অংশ থেকে মাড়িতে ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ সৃষ্টি হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
৪. দাঁতের এনামেলের ক্ষতি: টুথপিক দিয়ে দাঁতের ভেতরের দিকে বা এনামেলের উপরে জোরে ঘষা হলে দাঁতের সুরক্ষাকারী স্তর এনামেল ক্ষয় হতে পারে। এনামেল ক্ষতিগ্রস্ত হলে দাঁতে শিরশিরানি এবং ক্যাভিটির ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়।
🪥 টুথপিকের স্বাস্থ্যকর বিকল্প কী?
দাঁতের ফাঁক থেকে খাবার কণা সরাতে ডেন্টিস্টরা টুথপিকের চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর ও নিরাপদ পদ্ধতি ব্যবহারের পরামর্শ দেন:
ডেন্টাল ফ্লস: এটি দাঁতের ফাঁক এবং মাড়ির লাইনের কাছাকাছি পরিষ্কার করার সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি।
ইন্টারডেন্টাল ব্রাশ: দাঁতের ফাঁক কিছুটা বড় হলে এই ছোট ব্রাশগুলি ব্যবহার করা যেতে পারে, যা দ্রুত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
মাউথ ওয়াশ: খাবারের পর মাউথ ওয়াশ দিয়ে কুলকুচি করলে ক্ষুদ্র কণাগুলি বেরিয়ে আসে এবং মুখ সতেজ থাকে।
জল ব্যবহার: সামান্য গরম জল মুখে নিয়ে ভালোভাবে কুলকুচি করলেও বহু কণা বেরিয়ে যায়।