২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের রণকৌশল স্পষ্ট, পরিসংখ্যান ও পরিষেবা—দুই অস্ত্রেই ভোটযুদ্ধে নামছে তৃণমূল

আসন্ন ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) তাদের নির্বাচনী রূপরেখা স্পষ্ট করে দিয়েছে। পরিসংখ্যান ও পরিষেবা, এই দুটি সুনির্দিষ্ট কৌশলকে সামনে রেখে লড়াইয়ে নামতে চলেছে শাসকদল। গত ৪৮ ঘণ্টায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের শীর্ষ নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কার্যকলাপে সেই দ্বিমুখী নীতি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

অভিষেকের পরিসংখ্যানভিত্তিক আক্রমণ:

দলের ‘সেকেন্ড-ইন-কমান্ড’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মহেশতলায় ‘সেবাশ্রয় ২’-এর উদ্বোধনে তথ্য ও গবেষণামূলক যুক্তি পেশ করেন। প্রায় এক ঘণ্টার বক্তৃতায় তিনি স্মার্টফোনের পরিসংখ্যান দেখিয়ে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ করেন। জিএসটি বাবদ কেন্দ্র কত টাকা নেয়, বা আবাস যোজনা ও ১০০ দিনের কাজের জন্য কত টাকা আটকে রাখা হয়েছে—তার পূর্ণ হিসাব তুলে ধরে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, রাজ্যের পিছিয়ে পড়ার দায় সম্পূর্ণই দিল্লির।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবেগময় পরিষেবা বার্তা:

এর ঠিক একদিন পর নবান্ন সভাঘরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘উন্নয়নের পাঁচালি’ শীর্ষক কর্মসূচিতে সরকারি প্রকল্পগুলির সুবিধা রাজ্যবাসীর জীবনে কীভাবে পৌঁছেছে, তা তুলে ধরেন। লক্ষ্মী ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী থেকে কৃষক বন্ধুর মতো জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের খতিয়ান পেশ করে তিনি মানুষের সঙ্গে সরকারের আবেগময় ভরসার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন।

পরস্পরের পরিপূরক দুই সুর:

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, অভিষেকের পরিসংখ্যান কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ তৈরি করছে (‘কী পাওয়া গেল না’), আর মুখ্যমন্ত্রীর পরিষেবা বার্তা মানুষের জীবনে উন্নয়নের স্পষ্ট ছাপ দেখাচ্ছে (‘কী দেওয়া হল’)। এই দ্বিমুখী কৌশলে দল একসঙ্গে কেন্দ্রবিরোধী মনোভাব ও রাজ্য সরকারের প্রতি আস্থা—দু’টি আবেগকেই কাজে লাগাতে চাইছে।

এদিকে, গ্রামীণ ভোটব্যাঙ্ককে লক্ষ্য করে ডিসেম্বরেই প্রায় ১৬ লক্ষ উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে ‘বাংলার বাড়ি’-এর প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা ভোটের আগে প্রায় ২৮ লক্ষ পরিবারের মাথার ছাদ নিশ্চিত করবে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy