বাবা-মা জীবিত এবং ভারতেই বসবাস করছেন। তবুও অন্য এক দম্পতির পরিচয় ব্যবহার করে নিজের নাম ভোটার তালিকায় তুলে ফেলার অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। উত্তর ২৪ পরগনার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বসিরহাট এলাকায় এনুমারেশনের ফর্ম (SIR প্রক্রিয়া) ফিল-আপ করতে গিয়েই ওই যুবকের ‘কীর্তি’ ফাঁস হয়ে গিয়েছে। অভিযুক্ত যুবকের নাম রাজু মণ্ডল।
অভিযোগ, রাজু মণ্ডল প্রতিবেশী মহাদেব মণ্ডল ও তাঁর স্ত্রী নীলিমা মণ্ডলের ভোটার ও আধার কার্ডের তথ্য কারচুপি করে তাঁদের অজান্তেই নিজেকে তাঁদের ছেলে হিসেবে ভোটার তালিকায় নথিভুক্ত করেছেন। এই ঘটনা জানতে পেরে হতভম্ব মহাদেব ও নীলিমা। দীর্ঘদিনের বাসিন্দা এই দম্পতির নিজস্ব দুই সন্তান থাকা সত্ত্বেও ভোটার তালিকায় ‘তৃতীয় সন্তানের’ আগমন ঘিরে তীব্র শোরগোল পড়ে গিয়েছে সংগ্রামপুর-শিবাটী পঞ্চায়েত এলাকায়।
ভুক্তভোগী মহাদেব মণ্ডল স্থানীয় বিএলও এবং বিডিও-র কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে রাজু মণ্ডলের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। মহাদেব মণ্ডল বলেন, “আমাদের সন্দেহ, রাজু কিংবা তাঁর পরিবারের লোকজন আমাদের পরিচয়পত্র কারচুপি করে এই কাজ করেছে। রাজু আমাদের ছেলে নয়, গ্রামের জামাই হিসেবেই পরিচিত। ওকে আমার ছেলে হিসেবে মানলে আমার নিজের সন্তানরাই বঞ্চিত হবে। ওর নাম দ্রুত তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হোক।”
অন্যদিকে, মুর্শিদাবাদ থেকে আসা রাজু মণ্ডল স্বীকার করেছেন, তাঁর আসল বাবা-মা জীবিত। তবে, তিনি দাবি করেছেন, “ওঁরা নিজেরাই তাঁদের পরিচয়পত্র দিয়েছিলেন, যাতে এখানে আমার ভোটার লিস্টে নাম ওঠে। কেউ যদি স্বেচ্ছায় নথি না দেয় তাহলে কেউ কারও নথি চুরি করতে পারে? আমার শাশুড়ি সবটা জানেন।” তিনি জানান, নিজের বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ না থাকার কারণেই এই পথ বেছে নিয়েছেন।
স্থানীয় বিএলও বাপি মণ্ডল অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, “নির্বাচন কমিশনের গাইডলাইন মেনে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত যুবক এন্যুমারেশন ফর্ম ফিল-আপ করে জমা দিয়েছেন। সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
SIR প্রক্রিয়া চলাকালীন জালিয়াতির একের পর এক অভিযোগের মধ্যেই বসিরহাট সীমান্তবর্তী এলাকার এই ঘটনা নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, প্রশাসনের নজর এড়িয়ে কীভাবে এই কারচুপি ঘটল?