একসময় ছিল, যখন পুতুল নাচ দেখার জন্য মানুষকে সিনেমা হলের মতো টিকিট কেটে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াতে হতো। সেই জনপ্রিয়তা আজ অতীত। বর্তমানে উৎসব, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়া এই ঐতিহ্যবাহী শিল্পের দেখা মেলা ভার। এককালে সারা বছর ধরে বিভিন্ন মেলা-উৎসবের আসর জমাতেন পুতুল নাচ শিল্পীরা।
সেই সময় পুতুল নাচের চাহিদা এতই বেশি ছিল যে টিকিট ব্যবস্থার মাধ্যমে শিল্পীরা সারাবছর অর্থ উপার্জন করে নিজেদের পরিবারের হাল ধরতেন। কিন্তু বর্তমান প্রযুক্তির যুগে মানুষের চাহিদা বদলেছে। স্মার্টফোন ও আধুনিক চলচ্চিত্র দখল করে নিয়েছে নতুন প্রজন্মের মন। পুতুল নাচ এখন বিশেষ উৎসব বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অতীত ইতিহাস হিসেবে দেখানো হয়।
বিলুপ্তপ্রায় শিল্পের করুণ কথা:
পুতুল নাচ শিল্পী রাধেশ্যাম সরকার জানান, “প্রায় ২০ বছর ধরে পুতুল নাচ শিল্পীরা দল নিয়ে নিজেরাই পুতুল নাচ দেখাতেন। সারা বছরই কোনো না কোনো মেলা, উৎসব, অনুষ্ঠানে টিকিট পদ্ধতিতে পুতুল নাচ দেখাতেন তাঁরা। সে থেকেই পেট চলত পুতুল নাচ শিল্পীদের। তবে বর্তমানে আর সেই সব নেই। চাহিদা কমায় অনেকেই পেশা বদলেছেন।”
শিল্পীরা মনে করেন, আজও পুতুল নাচের চাহিদা রয়েছে, তবে তা সীমিত সংখ্যক প্রজন্মের কাছে। ঐতিহ্যবাহী এই পুতুল নাচ দেখতে একসময় টাকা খরচ করতে হলেও, এখন বিশেষ উৎসব অনুষ্ঠানে তাঁদের প্রদর্শনের জন্য ডাকা হয়।
ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন:
তবে বর্তমান আধুনিক প্রযুক্তির যুগেও এই ঐতিহ্যবাহী পুতুল নাচ মঞ্চস্থ হওয়াটা সত্যিই অভাবনীয়। যেখানে বর্তমান প্রজন্ম মোবাইলে আসক্ত, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে পুতুল নাচের এমন আসর শিল্পীদের ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখাচ্ছে। পুতুল নাচ শিল্পীরা আশাবাদী, এই অভিনব উদ্যোগের মাধ্যমে বিলুপ্তপ্রায় এই শিল্পের চাহিদা ভবিষ্যতে বাড়বে।