নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, বা সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট (CAA), যা ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে প্রতিবেশী দেশ থেকে আসা সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব সুনিশ্চিত করে, তাকেই ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের অন্যতম প্রধান প্রচারের হাতিয়ার করতে চলেছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। রাজ্যে বর্তমানে ভোটার তালিকার স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (SIR) প্রক্রিয়া চলছে, যা আগামী ৪ ডিসেম্বর শেষ হবে। এরপরই বিজেপি এই আইনকে সামনে রেখে পুরোদমে প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে।
রাঢ়বঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর গোপন বৈঠক
গেরুয়া শিবিরের অন্দরের খবর, CAA নিয়ে দলের সাংগঠনিক বৈঠকগুলোতে একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে দলের পর্যবেক্ষক তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব শিল্পশহর দুর্গাপুরে রাঢ়বঙ্গের চারটি সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্বকে নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন। এই জেলাগুলি হলো— কাটোয়া, বর্ধমান, বোলপুর ও বীরভূম।
বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই সাংবাদিকদের বলেন, এটি অত্যন্ত গোপনীয় সাংগঠনিক বৈঠক। তিনি শুধু এটুকুই বলতে পারেন যে, “২০২৬-এ নির্বাচনকে সামনে রেখেই এই বৈঠক।”
বিজেপি বিধায়কের স্পষ্ট বার্তা
পরবর্তীকালে, লক্ষ্মণ ঘোড়ুই ইটিভি ভারতের কাছে ফোনে নিশ্চিত করেন যে, CAA নিয়ে তাঁদের ক্যাম্প অনেকদিন ধরেই শুরু হয়ে গিয়েছে।
“বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে যে হিন্দু শরণার্থীরা আমাদের এখানে এসেছেন, তাঁদের চিন্তার কোনও কারণ নেই। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই বলা হয়েছে। আগামী নির্বাচনে সিএএ অবশ্যই নির্বাচনী ইস্যু হতে চলেছে।”
তিনি জানান, দুর্গাপুরের বিভিন্ন এলাকায় ইতিমধ্যেই CAA সংক্রান্ত কাজ চলছে এবং শরণার্থীদের সাহায্য করতে শিবির করা হচ্ছে।
বিরোধীদের কটাক্ষ
অন্যদিকে, রাজ্যের শাসকদলের নেতারা বিজেপির এই কৌশল নিয়ে কটাক্ষ করেছেন। আসানসোল জেলার সহ-সভাপতি অভিজিৎ দত্ত অবশ্য CAA নিয়ে আপাতত মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন, তবে বলেন, কেন্দ্রীয় নেতারা ২০২৬-এ বাংলা বিজয়ের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন।
শাসকদলের নেতারা বলছেন, “মানুষকে বিভ্রান্ত আর মানুষকে সারা বছর কষ্টে রাখাটাই ভারতীয় জনতা পার্টির অন্যতম প্রধান কাজ। তবে বাংলা বিজয় ভারতীয় জনতা পার্টির কাছে স্বপ্নই থেকে যাবে। কারণ, বাংলার মানুষ অত্যন্ত সুশিক্ষিত। এখানে তাই জাতপাতের রাজনীতি দিয়ে বিজেপি খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি আর ভবিষ্যতেও পারবে না।”