চোখ একটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর অঙ্গ, যা আমাদের পৃথিবীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে সাহায্য করে। চোখে দেখতে না পাওয়া মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় অভিশাপ। চোখ বা এর আশেপাশে বিভিন্ন কারণে ব্যথা হতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে, শুধু চোখের অসুখ নয়, শরীরের অন্য রোগ থেকেও চোখ ব্যথা হতে পারে।
👁️ চোখ ব্যথার সাধারণ কারণ:
চোখ ব্যথার সাধারণ কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে:
-
কনজাংটিভাইটিস (Conjunctivitis/ চোখ ওঠা): অ্যালার্জি, ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে চোখের আবরণীতে প্রদাহ হলে চোখ লালচে হয়, চুলকায় ও জ্বালাপোড়া করে।
-
চোখের পাতায় প্রদাহ: চোখের পাতায় ইনফেকশন বা প্রদাহ হলেও চোখে ব্যথা হতে পারে।
-
কর্নিয়ায় আঘাত বা ইনফেকশন: চোখে কিছু ঢুকলে বা আঘাত পেলে কর্নিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যা তীব্র ব্যথা সৃষ্টি করে। যাঁরা কনটাক্ট লেন্স ব্যবহার করেন, তাঁদের কর্নিয়ায় ইনফেকশনের ঝুঁকি বেশি।
-
বহিরাগত বস্তু: চোখে ধুলো, দানাদার বস্তু বা রাসায়নিক ঢুকলেও তীব্র অস্বস্তি ও ব্যথা হয়। সাধারণত জল দিয়ে চোখ পরিষ্কার করলেই এটি ঠিক হয়ে যায়।
-
অঞ্জনি (Stye): চোখের পাতায় অঞ্জনি হলে খুব ব্যথা হয়।
🚨 গুরুতর রোগের লক্ষণ হিসেবে চোখ ব্যথা:
চোখ ব্যথা কিছু গুরুতর শারীরিক রোগের লক্ষণও হতে পারে:
-
গ্লুকোমা (Glaucoma): এটি চোখের অভ্যন্তরীণ চাপ বাড়িয়ে দেয়। তীব্র চোখ ব্যথা, বমি ও বমি বমি ভাব, মাথা ব্যথা, এবং দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া এর প্রধান লক্ষণ। দ্রুত চিকিৎসা না করালে অন্ধত্ব হতে পারে।
-
মাইগ্রেন, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস: শরীরের এই ধরনের রোগ থেকেও চোখ ব্যথা হতে পারে।
-
চোখের নার্ভের প্রদাহ: স্ক্লেরোসিস বা ইনফেকশন থেকে চোখের নার্ভে প্রদাহ হলেও চোখে তীব্র ব্যথা হয় এবং দৃষ্টিশক্তিও কমে যেতে পারে।
-
সাইনোসাইটিস (Sinusitis): চোখের চারদিকে সাইনাসের অবস্থান থাকায় সাইনোসাইটিস হলেও চোখে ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
⚠️ চোখ ব্যথার সঙ্গে দেখা দেওয়া উপসর্গ:
চোখ ব্যথার সঙ্গে এই উপসর্গগুলো দেখা দিলে আরও সতর্ক হতে হবে:
-
দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া
-
চোখ দিয়ে জল বা পিঁচুটি পড়া
-
চোখের ভেতর কিছু আটকে আছে এমন অনুভূতি
-
মাথা ব্যথা
-
আলোর দিকে তাকাতে অস্বস্তি (Photophobia)
-
বমি ও বমি বমি ভাব
-
চোখের মণি লালচে বা গোলাপি হয়ে যাওয়া
-
ঘুম থেকে ওঠার পর পিঁচুটি জমে চোখ বন্ধ হয়ে থাকা
👨⚕️ কখন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন?
যদি চোখ ব্যথার পাশাপাশি হঠাৎ দৃষ্টিশক্তি কমে যায়, চোখে অসহনীয় ব্যথা হয়, মাথা ঘোরানো থাকে বা বমি হয়, তবে দেরি না করে অবশ্যই চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সাধারণ কারণগুলোর জন্য চিকিৎসকের পরামর্শে যথাযথ চিকিৎসা নিতে হবে।