: চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে থাকা পাকিস্তানে এবার বেকারত্বের ভয়াবহ ছবি প্রকাশ পেল। দেশের মোট কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর প্রায় ৫৩.৮ শতাংশ মানুষই বর্তমানে কর্মহীন হয়ে রয়েছেন। খোদ পাকিস্তান সরকারের মন্ত্রক— ‘পাকিস্তান ব্যুরো অফ স্ট্যাটিস্টিকস’ (PBS) থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে এই উদ্বেগজনক তথ্য সামনে এসেছে। এর জেরে বিশ্বের দরবারে আরও একবার মুখ পুড়ল শেহবাজ শরিফ সরকারের।
পাকিস্তানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এআরওয়াই নিউজের দাবি, PBS-এর তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে দেশটিতে বেকার মানুষের সংখ্যা প্রায় ৮০ লক্ষের কাছাকাছি। গত এক বছরে দেশের মোট বেকারত্বের হার ০.৮ শতাংশ বেড়ে ৭.১ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে।
কর্মহীন ৫৪% কর্মক্ষম মানুষ!
পাক সংবাদমাধ্যমটির বিস্ফোরক রিপোর্টে বলা হয়েছে, কর্মক্ষম মানুষদের মধ্যে বর্তমানে পাকিস্তানে কর্মরত আছেন মাত্র ৪৩ শতাংশ মানুষ। বাকি ৫৩.৮ শতাংশ জনগণই বর্তমানে কাজ ছাড়া।
বেতন বাড়লেও লাভ নেই: নাভিশ্বাস পাকিস্তানি জনতার
পিবিএস-এর রিপোর্টে বেতনের ক্ষেত্রে সামান্য বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ২০২০-২১ সালে কর্মীদের গড় বেতন ছিল ২৪,০২৮ পাকিস্তানি রুপি, যা বর্তমানে বেড়ে পুরুষদের ক্ষেত্রে ৩৯,৩০২ এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ৩৭,৩৪৭ পাকিস্তানি রুপি হয়েছে।
তবে, এই সামান্য বেতন বৃদ্ধিও বিগত পাঁচ বছরে মুদ্রাস্ফীতির চূড়োয় উঠে বসা পাকিস্তানের জনগণের কোনো কাজে আসছে না। আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধির কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতেও নাভিশ্বাস উঠেছে আমজনতার।
-
আটার দাম: বর্তমানে পাকিস্তানে প্রতি কেজি আটার দাম রয়েছে ১২০-১৪০ পাকিস্তানি রুপিরও বেশি। অথচ পাঁচ বছর আগে এই দাম ছিল মাত্র ৭০ পাকিস্তানি রুপির কাছাকাছি।
অর্থাৎ, বেতন বাড়লেও মুদ্রাস্ফীতির দৌলতে আখেরে পাকিস্তানি জনগণের আর্থিক অবস্থা দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়েছে।
ইসলামাবাদের দাবি খারিজ করল ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক
চলতি বছরেই পাকিস্তান সরকার দাবি করেছিল যে দেশে দারিদ্র্য হ্রাস পাচ্ছে। কিন্তু সেই দাবিকে কার্যত নস্যাৎ করে দিয়েছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দরিদ্রদের মধ্যে কেবল সীমিত গোষ্ঠীই সামান্য কিছু উন্নতি দেখেছে। কিন্তু বহু প্রান্তিক মানুষ এখনও দারিদ্র্য সীমার নীচেই অবস্থান করছেন। পাশাপাশি, গ্রামের সাধারণ মানুষেরাও ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির চাপে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই চরম বেকারত্ব এবং লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার ওপর গভীর প্রভাব ফেলবে।