একদিকে যখন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিএলওদের কাজের চাপ নিয়ে অভিযোগ উঠছে, ঠিক তখনই এক অন্যরকম মানবিক ছবি দেখা গেল জলপাইগুড়িতে। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বিডিও মিহির কর্মকার তাঁর ব্লকের অন্যতম দুর্গম এলাকা বাহির চরে বিএলও-কে সাহায্য করতে সরাসরি মাঠে নামলেন।
তিস্তা নদীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ
-
এলাকার অবস্থান: বাহির চর হলো জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের নন্দনপুর বোয়ালমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত তিস্তা নদীর প্রায় ৮ কিলোমিটার লম্বা এবং ৪-৫ কিলোমিটার চওড়া বালির চরে অবস্থিত। এটি একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো এলাকা, যেখানে জনসংখ্যা প্রায় ২৫০০।
-
যোগাযোগের সমস্যা: গ্রামে যাতায়াতের ন্যূনতম ব্যবস্থাও নেই। বর্ষায় নৌকা ছাড়া গতি নেই। অন্যদিকে, শীতকালে ধু ধু বালির চর পেরিয়ে পায়ে হেঁটে পৌঁছতে হয়, অথবা ট্রাক্টরই একমাত্র ভরসা। এই প্রত্যন্ত এলাকায় সন্ধ্যার পর চারদিক থেকে শিয়ালের ডাক ভেসে আসে।
-
বুথ ও ভোটার সংখ্যা: এই চরের মধ্যে রয়েছে ১৭/১২৩ নম্বর বুথ, যার ভোটার সংখ্যা প্রায় ৮০০।
বিডিও-র মানবিক উদ্যোগ
বাহির চরের মতো দুর্গম এলাকায় এসআইআর (বিশেষ নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়া)-এর দায়িত্ব পালন করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল বিএলও গৌতম সরকারের পক্ষে। তিনি বিডিও-কে বিষয়টি জানানোর পরই এই পদক্ষেপ নেন মিহির কর্মকার।
-
ট্রাক্টরে যাত্রা: বিডিও তাঁর টিম নিয়ে প্রায় ১২ কিলোমিটার নদীর চর পেরিয়ে ট্রাক্টরে চড়ে গ্রামে পৌঁছন।
-
শিবির স্থাপন: বিডিও তাঁর টিমকে নিয়ে এসআইআর শিবির স্থাপন করেন এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের ফর্ম ফিল-আপ করান।
-
বিএলও-র প্রতিক্রিয়া: বিএলও গৌতম সরকার জানান, “এই পরিস্থিতিতে এখানে এসআইআর-এর ফর্ম পূরণ করা কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। তিনি (বিডিও) প্রত্যন্ত এলাকায় টিম নিয়ে এসে সহযোগিতা করেছেন।”
স্থানীয় বাসিন্দা প্রদীপ সেন জানান, বিডিও তাঁর টিম নিয়ে এসে ফর্ম পূরণে আরও বেশি সাহায্য করেছেন, যার ফলে তাঁদের সমস্যার সমাধান হয়েছে। এই ঘটনা সরকারি আধিকারিকদের প্রতি সাধারণ মানুষের ভরসা বাড়িয়েছে।