কসবার একটি হোটেলে বীরভূমের যুবক আদর্শ লোসালকাকে খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন লালবাজারের গোয়েন্দা প্রধান রূপেশ কুমার। তিনি সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছেন, খুনের ঘটনায় ধৃত যুবক ধ্রুব মিত্র এবং যুবতী কমল সাহা লিভ-ইন পার্টনার ছিলেন এবং তাঁরা দমদমে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।
খুনের রাতে কী ঘটেছিল?
গোয়েন্দা প্রধানের বক্তব্য অনুযায়ী, শুক্রবার রাতে হত্যার আগে যা ঘটেছিল:
-
পরিচয়: একটি ডেটিং অ্যাপে ২০ নভেম্বর যুবতী কমল সাহার সঙ্গে আদর্শের পরিচয় হয়।
-
হোটেল বুকিং ও পার্টি: এরপর ২১ নভেম্বর রাত সাড়ে ন’টায় তাঁরা দেখা করার জন্য কসবার হোটেলে দুটি রুম ভাড়া নেন। রাতে বাইরে থেকে খাবার অর্ডার করা হয় এবং তিনজন মিলে পার্টি করেন।
-
ধস্তাধস্তি ও হত্যা: হোটেলের ঘরে ধস্তাধস্তির প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। ধস্তাধস্তির জেরে আদর্শ পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারান। এরপর ধ্রুব এবং কমল তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন।
-
চুরি ও পলায়ন: রাত ২টো নাগাদ তাঁরা মৃতের ওয়ালেটে থাকা দেড় হাজার টাকা, দু’টি মোবাইল ফোন এবং এটিএম কার্ড নিয়ে হোটেল থেকে বেরিয়ে যান।
এটিএম পিন বদলে টাকা চুরি
গোয়েন্দা প্রধান জানিয়েছেন, হোটেল থেকে বেরিয়ে রাতেই উলটোডাঙায় একটি এটিএমে যান কমল এবং ধ্রুব।
-
কৌশল: আদর্শের ফোন লক থাকায় তাঁরা সিম কার্ড খুলে নিজেদের ফোনে লাগিয়ে ‘ফরগট পিন’ অপশন ব্যবহার করেন। ওটিপি (OTP) দিয়ে এটিএম কার্ডের পিন বদলে তাঁরা ১১ হাজার টাকা তুলে নেন।
-
আত্মসমর্পণ: এরপর তাঁরা ট্রেন ধরে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ান। পরে পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করে। পুলিশের একটি সূত্র জানায়, একাধিক জায়গায় ঘুরেও আত্মগোপনের উপায় না পেয়ে ধৃতরা নিজেরাই কসবা থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছিলেন।
ধ্রুব মিত্রর বাড়ি নদিয়ার কুপার স্ক্যামে এবং কমলের বাড়ি ব্যারাকপুরের মোহনপুরে। যদিও খুনের কারণ সম্পর্কে এখনও নির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি, তবে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃতদের বয়ানে অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে। পুলিশ এই বিষয়ে আরও জেরা করবে।