রাজ্যজুড়ে ভোটার তালিকা শুদ্ধিকরণ প্রক্রিয়া (SIR) ঘিরে তৈরি হওয়া আতঙ্কের মধ্যেই এবার এক ব্যক্তির মৃত্যু নিয়ে তীব্র রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলায় ঘুমের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বছর একচল্লিশের যুবক বাবলু হেমব্রমের। তাঁর পরিবারের দাবি, SIR আতঙ্কেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
কী বলছে মৃতের পরিবার?
বাবলু হেমব্রমের বাড়ি পিংলা বিধানসভার খড়্গপুর লোকাল থানার দক্ষিণ ঢেকিয়া এলাকায়। মৃতের বোন মনু টুডু জানান:
-
আতঙ্কের কারণ: “২০০২ সালের ভোটার তালিকায় বাবা-মায়ের নাম নেই। এই নিয়ে দাদা টেনশনে ছিল। শুক্রবারও আমি বাপের বাড়ি এসেছিলাম। তখনও ভাল ছিল। গতকাল রাতে ঘুমিয়েছিল। সকালে মা ডাকতে গিয়ে দেখে দাদা মারা গিয়েছে। টেনশনে হার্ট অ্যাটাক হয়েছে।“
-
মানসিক চাপ: পরিবারের দাবি, বাবা-মায়ের নাম তালিকায় নেই জানতে পেরে গত কয়েকদিন ধরেই বাবলু অস্বাভাবিক মানসিক চাপে ভুগছিলেন। এনুমারেশন ফর্ম পেলেও তিনি আতঙ্কিত ছিলেন এবং রাতে ঘুমোতে পারতেন না।
খবর পেয়ে মৃতের বাড়িতে ছুটে যান পিংলার তৃণমূল বিধায়ক অজিত মাইতি।
তৃণমূল-বিজেপি সংঘাত
বাবলু হেমব্রমের মৃত্যু নিয়ে সরাসরি বিজেপিকে আক্রমণ করেছে তৃণমূল:
-
তৃণমূলের অভিযোগ (অজিত মাইতি): ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তথা পিংলার বিধায়ক অজিত মাইতি বলেন, “বিজেপি নেতারা বলছেন, যাঁদের নাম তালিকায় থাকবে না, তাঁদের দেশ ছাড়া করা হবে। এই নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত ছিলেন বাবলু। নির্বাচন কমিশন এই মৃত্যুর দায় এড়াতে পারে না। কারণ, ২০০২ সালের ১৫ বছর আগে থেকে বাস করা ব্যক্তির নাম ২০০২ সালের তালিকায় না থাকলে তার দায় কমিশনের।”
পাল্টা তৃণমূলকে নিশানা করেছে গেরুয়া শিবির:
-
বিজেপির অভিযোগ (তন্ময় দাস): বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তন্ময় দাস বলেন, “কী কারণে মারা গিয়েছেন, জানি না। তবে ওখানকার বিধায়ক তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি দাবি করছেন, এসআইআর আতঙ্কে মৃত্যু হয়েছে। যদি এসআইআর আতঙ্কে মৃত্যু হয়, তার দায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল নেতাদের। এসআইআর নিয়ে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছেন তাঁরা। মানুষকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছেন। মানুষকে প্রাণে মারার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।”