মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় বাবরি মসজিদ নির্মাণের ঘোষণার জেরে বাংলার রাজনীতিতে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। তৃণমূলের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর আগামী ৬ ডিসেম্বর, অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিন, এই মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার ডাক দিয়েছেন। এই ঘোষণার পরই তৃণমূল এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি এবং তীব্র আক্রমণ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং অভিযোগ করেছেন যে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গকে বাংলাদেশে পরিণত করতে চাইছেন। তিনি বলেন, “ঠিক যেভাবে জিন্নাহ ‘ডিরেক্ট অ্যাকশন ডে’ করেছিলেন। এই মুখ্যমন্ত্রী নিজেকে প্রধানমন্ত্রী মনে করেন। তিনি ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদের ধ্বংসের দিন পালন করছেন বাংলায়। বাবরের মতো অনুপ্রবেশকারীকে গৌরবান্বিত করার কী প্রয়োজন?”
এরপরই গিরিরাজ সিং একটি ভয়াবহ প্রশ্ন তুলেছেন: “হিন্দুদের উপর কি ‘ডিরেক্ট অ্যাকশন ডে’-এর মতো গুলি চালানো হবে? উনি পশ্চিমবঙ্গ থেকে হিন্দুদের বেরিয়ে যাওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছেন।”
বিজেপি নেতাদের নিন্দা
বিজেপি-র অন্যান্য নেতারাও এই ঘোষণার তীব্র নিন্দা করেছেন:
-
মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া: তিনি বলেন, “গোটা ভারত রাম মন্দির তৈরির আনন্দে মাতোয়ারা। আর ঠিক সেই সময়েই নতুন বাবরি তৈরির ঘোষণা করা হচ্ছে। এটি হিন্দুদের বিরুদ্ধে ঘৃণার নিদর্শন মাত্র।”
-
সুকান্ত মজুমদার: কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বাংলার হিন্দুদের উদ্দেশ্য করে বলেছেন, “বাংলার হিন্দুদের এটাকে একটি বার্তা হিসেবে নেওয়া উচিত যে, তাঁর মতো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থিত লোকেরা কীভাবে হিন্দুদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে এবং বাংলার সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্ট করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।”
হুমায়ুন কবীরের সাফাই
এদিকে, তৃণমূলের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর নিজের ঘোষণার সপক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। তিনি বলেন, “কেউ জগন্নাথ মন্দির তৈরি করতে পারলে বাবরি মসজিদে আপত্তি কী! মদ খাওয়ার জন্য পুজো কমিটিগুলোকেও তো ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। মুসলিম হয়ে মুসলিমের টাকায় মসজিদ গড়তে সমস্যা কী!”
এই ঘোষণার পরই মুর্শিদাবাদে তৃণমূল বিধায়কের এই বক্তব্যের পাল্টা হিসেবে বিজেপি-ও রাম মন্দির তৈরির ঘোষণা করেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।