পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোটার তালিকা সংশোধনের (SIR) বিরোধিতা করে নির্বাচন কমিশনে চিঠি পাঠানোর ঠিক পরেই, নাম না করে তাঁকে কড়া আক্রমণ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অনুপ্রবেশকারীদের বাঁচাতে কিছু রাজনৈতিক দল এই প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করছে—এমনই গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন তিনি, যা নিয়ে রাজ্য-রাজনীতিতে চরম উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
🔥 শাহের ট্যুইটে কড়া বার্তা
শুক্রবার এক্সে (সাবেক ট্যুইটার) একটি পোস্ট করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখানে তিনি বলেন,
“অনুপ্রবেশ বন্ধ করা শুধু দেশের সুরক্ষার জন্য জরুরি নয়, বরং গণতন্ত্রকে দূষিত হওয়া থেকে রক্ষা করার জন্যও প্রয়োজন। যদিও কয়েকটি রাজনৈতিক দল অনুপ্রবেশকারীদের পাশে থাকার জন্য কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে। পাশাপাশি তারা নির্বাচন কমিশনের ভোটার লিস্ট সংশোধনের বিরোধীতাও করছে।”
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই পোস্টের মূল লক্ষ্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। এর মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে গেল, ভোটার তালিকা সংশোধনের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার নির্বাচন কমিশনের পাশেই রয়েছে এবং এই প্রক্রিয়া থেকে পিছু হটবে না।
📜 মমতার চিঠিতে কী ছিল?
বৃহস্পতিবার দেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে একটি চিঠি লেখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি ‘SIR অপরিকল্পিত’ এবং ‘জোর করে চাপিয়ে দেওয়া’ বলে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি, তিনি দাবি করেন এই প্রক্রিয়ার জন্য ‘মানুষের জীবনও বিপন্ন হচ্ছে’।
-
অপ্রশিক্ষিত বিএলও: মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, বুথ লেভেল অফিসারদের (BLO) সঠিক ট্রেনিং দেওয়া হয়নি এবং ডকুমেন্ট সম্পর্কেও তাদের স্পষ্ট ধারণা নেই।
-
অমানবিক চাপ: একটি ছোট ডেডলাইনের মধ্যে এই কঠিন কাজ করতে হচ্ছে, যার ফলে কর্মীদের উপর অমানবিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে। ‘মানুষের জীবন বিপন্ন’ হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে এই পরিস্থিতিতে।
-
SIR বন্ধের দাবি: এই সমস্ত কারণ দেখিয়ে তিনি যত দ্রুত সম্ভব এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপ এবং SIR প্রক্রিয়া বন্ধ করার দাবি জানান।
🤝 ২৫ তারিখের কর্মসূচি এবং সংঘাতের পূর্বাভাস
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই কড়া বার্তার নেপথ্যে মুখ্যমন্ত্রীর আগামীকালের কর্মসূচি রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, আগামী ২৫ তারিখ ঠাকুরনগরে SIR-এর বিরোধিতা করে একটি পদযাত্রা এবং জনসভা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই কর্মসূচি ঘোষণার পরই রাজ্য বিজেপি তৃণমূল সুপ্রিমোকে বিঁধেছে। আর তার ঠিক পরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব-কলমে মমতাকেই কড়া বার্তা দিলেন, যা স্পষ্টতই রাজ্য এবং কেন্দ্রের মধ্যে অনুপ্রবেশকারী ও ভোটার তালিকা সংশোধন বিতর্ককে চরম সংঘাতের দিকে ঠেলে দিল।