রাজ্যে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধনের কাজ (SIR) চলার কারণে সরকারি স্কুলের পঠন-পাঠন কিভাবে ব্যাহত হচ্ছে, তারই এক চরম চিত্র ধরা পড়ল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারী ব্লকের বড়গাছি এলাকার বাগদুয়ার সান্তাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। স্কুলের তিনজন শিক্ষকই বিএলও (Booth Level Officer)-এর কাজে ব্যস্ত থাকায় গত বুধবার থেকে স্কুলের পঠন-পাঠন, এমনকি মিড-ডে মিলও পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
স্কুল বন্ধের কারণ:
-
শিক্ষকদের দায়িত্ব: এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট ৪৩ জন পড়ুয়া এবং তিনজন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন—সময় মুর্মু, মার্গরিটা মার্ডি এবং মানিক রায়চৌধুরী।
-
বিএলও নিয়োগ: নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে স্কুলের দু’জন শিক্ষককে বিএলও হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল। এতদিন প্রধান শিক্ষক সময় মুর্মু স্কুলের পঠন-পাঠনের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন।
-
প্রধান শিক্ষককেও দায়িত্ব: অভিযোগ, গত ১৮ তারিখ থেকে প্রধান শিক্ষককেও অ্যাডিশনাল বিএলও-র দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপরেই স্কুলের তিনজন শিক্ষকই SIR-এর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন এবং স্কুলে আসা বন্ধ করে দেন বলে অভিযোগ।
-
ফল: স্কুল পুরোপুরি বন্ধ থাকায় বুধবার থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা সময়মতো স্কুলে এলেও, বাইরে থেকেই ব্যাগ কাঁধে নিয়ে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছে।
শিক্ষক ও অভিভাবকদের বক্তব্য:
-
সহকারি শিক্ষিকা মার্গারিটা মার্ডি স্বীকার করেন, “গতকাল থেকে স্কুল বন্ধ রয়েছে। প্রধান শিক্ষককেও অ্যাডিশনাল বিএলও-র দায়িত্ব দেওয়া হয়। ফলে স্কুল চালানোটা খুব কঠিন হয়ে পড়ছে আমাদের পক্ষে।”
-
ছাত্র বিবেক মার্ডি জানায়, “গতকাল থেকেই স্কুল বন্ধ। কী কারণে বন্ধ সেটা জানি না। স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকারাও আসছে না। তাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। কবে স্কুল খুলবে সেটাও জানি না।”
-
অভিভাবকদের উদ্বেগ: ডিসেম্বরে বার্ষিক পরীক্ষা রয়েছে। কিন্তু এই সময়ে শিক্ষকের অভাবে পড়াশোনা বন্ধ থাকায় অভিভাবকরা গভীর দুশ্চিন্তায়। গ্রামবাসী পাসকাল কিস্কু দাবি করেছেন, অন্তত একজন শিক্ষককে এই স্কুলে নিয়োগ করে পড়াশোনা চালু রাখার ব্যবস্থা করা হোক।
প্রশাসনের পদক্ষেপ:
গঙ্গারামপুরের মহকুমা শাসক অভিষেক শুক্লা মৌখিকভাবে জানিয়েছেন যে, বিষয়টি তাঁর জানা ছিল না। তিনি বলেন, “আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি। খুব তাড়াতাড়ি এই স্কুলে যেন নতুনভাবে পঠন-পাঠন চালু করা যায় সেই ব্যবস্থা করছি।”