কলকাতা। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংঘাত চরমে উঠল। রাজভবন থেকে সাংসদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দেওয়ার পর, মঙ্গলবার হেয়ার স্ট্রিট থানায় তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন রাজ্যপাল বোস।
এই আইনি পদক্ষেপের খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে পাল্টা তোপ দেগেছেন আইনজীবী সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দাবি করেন, রাজভবনের উল্লেখ করা ধারাগুলি (১৫১, ১৫২, সহ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারা) তাঁর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। উল্টে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতা, রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্টতা, রাজ্যের বিরুদ্ধে ‘উস্কানিমূলক মন্তব্য’ এবং ‘ভাগাভাগির রাজনীতি’ করার মতো গুরুতর অভিযোগ এনেছেন তিনি। কল্যাণ জানিয়েছেন, তিনিও রাজ্যপালের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করবেন।
পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে কল্যাণ বলেন, “একটা চিঠি দেওয়া মানেই এফআইআর নয়।” নিজের অবস্থানে অনড় থেকে তিনি বলেন, “রাজ্যপাল নিজেই উস্কানিমূলক কথা বলেছেন এবং রাজভবন যে সমস্ত ধারার উল্লেখ করেছে, সেগুলি আসলে রাজ্যপালের ক্ষেত্রেই প্রয়োগ করা উচিত। উনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে লোক ক্ষ্যাপাচ্ছেন।”
কেন এই অভিযোগ?
সম্প্রতি তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় রাজভবনে অস্ত্র ও বিস্ফোরক মজুত থাকার বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন। রাজভবন সেই মন্তব্যকে ‘ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ আখ্যা দিয়েছিল এবং তার প্রতিবাদে রাজভবনে বোমা ও গুলি খোঁজার জন্য পুলিশ এবং বোম্ব স্কোয়াডকে দিয়ে তল্লাশিও করানো হয়েছিল। যদিও তল্লাশিতে আপত্তিকর কিছুই মেলেনি।
রাজভবন সূত্রে জানানো হয়েছে, সাংসদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলি গুরুতর ও জামিন অযোগ্য। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার বিভিন্ন ধারা অনুযায়ী, তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দায়ের হয়েছে, তাতে সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদণ্ডের সম্ভাবনা রয়েছে। রাজভবনের অভিযোগ মূলত দেশের ঐক্য, সংহতি এবং সার্বভৌমত্বের প্রতি আঘাত, মানুষকে ভুল বোঝানো এবং হিংসা ছড়ানোর মতো গুরুতর বিষয়ে। তবে রাজভবনের এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।