জলবায়ু বিনিয়োগেই ঘটবে ‘সবুজ বিপ্লব’, ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতে তৈরি হবে ৫০ লাখ নতুন চাকরি!

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ভারত যদি বড় আকারের বিনিয়োগ করে, তবে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে ৫ মিলিয়নেরও বেশি (৫০ লাখ) নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হতে পারে। সম্প্রতি ডেলয়েট ইন্ডিয়া ও রেইনম্যাটার ফাউন্ডেশনের যৌথ রিপোর্ট ‘দ্য স্টেট অফ ক্লাইমেট রেসপন্স ইন ইন্ডিয়া’-তে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।

রিপোর্ট অনুযায়ী, এই বিশাল কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষ্য পূরণে দেশে প্রায় ১.৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন। এই বিনিয়োগের সুবাদে দেশের অর্থনীতিতে বার্ষিক ৩.৫ থেকে ৪ ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত অতিরিক্ত উৎপাদন আসতে পারে। সবুজ জ্বালানি, উৎপাদন, পরিবহন, গুদামজাতকরণ এবং যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতেই এই চাকরি তৈরি হবে।

তবে রিপোর্টে সতর্ক করা হয়েছে যে, বৃষ্টিপাতের ধরণে পরিবর্তন, তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং জীববৈচিত্র্য হ্রাসের কারণে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। এটি ব্যবসার খরচ বাড়াচ্ছে এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় সরাসরি প্রভাব ফেলছে। তাই বিচ্ছিন্ন প্রকল্প নয়, বরং সরকার, কর্পোরেট এবং নাগরিক সমাজকে একসঙ্গে একটি সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ডেলয়েট ইন্ডিয়ার পার্টনার অশ্বিন জ্যাকব বলেন, “ভারতের জলবায়ু উদ্যোগ এখন একক, সমন্বিত মিশনে পরিণত হওয়া দরকার, যা আমাদের বিনিয়োগ ও উদ্ভাবনের ধরন বদলে দেবে।”

রিপোর্টের অংশ হিসেবে করা ২০২৫ সালের নাগরিক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৮৬ শতাংশ ভারতীয়ই মনে করেন যে জলবায়ু পরিবর্তন তাঁদের দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলছে। এক-তৃতীয়াংশ মানুষ জানিয়েছেন, এতে তাঁদের স্বাস্থ্য ও জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশিরভাগ নাগরিক নিজস্ব উদ্যোগে বর্জ্য আলাদা করা (৪৪%) বা বিদ্যুৎ-জল সাশ্রয়ের (৪০%) মতো পদক্ষেপ নিলেও, সমন্বয়ের অভাবে উদ্যোগগুলো বৃহত্তর পরিসরে ছড়াতে পারছে না।

ডেলয়েট ইন্ডিয়ার অন্য পার্টনার প্রশান্ত নুতুলা জোর দিয়ে বলেন, “সবুজ কর্মসংস্থান বাড়াতে হলে সরকার, ব্যবসা ও সমাজকে একসঙ্গে এগোতে হবে। বিচ্ছিন্ন উদ্যোগে লাভ হবে না।” রেইনম্যাটার ফাউন্ডেশনের প্রধান সমীর শিশোদিয়া মনে করেন, জটিলতাকে ভয় না পেয়ে সবাই একসঙ্গে কাজ করলে জলবায়ুর লড়াই থেকেই নতুন সুযোগ ও উদ্ভাবনের রাস্তা তৈরি হবে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy