ওজন বাড়ার জন্য বেশিরভাগ মানুষই অতিরিক্ত খাওয়া এবং শরীরচর্চার অভাবকে দায়ী করেন। তবে আমরা প্রায়শই এমন কিছু দৈনন্দিন অভ্যাসকে এড়িয়ে যাই, যা নীরবে আমাদের ওজন কমানোর প্রচেষ্টাকে নষ্ট করে দিতে পারে। আপনি যদি ওজন কমানোর চেষ্টা করে বারবার ব্যর্থ হচ্ছেন মনে করেন, তাহলে আপনার দৈনন্দিন জীবনযাত্রার দিকে একবার নজর দিন। কিছু সাধারণ অভ্যাস আপনার অজান্তেই ওজন বৃদ্ধিতে অবদান রাখতে পারে। এই অভ্যাসগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকলে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা অনেকটাই সহজ হবে।
যেসব অভ্যাস আপনার ওজন বাড়াতে পারে:
১. সকালের নাস্তা বাদ দেওয়া:
অনেকেই ক্যালরি কমানোর জন্য সকালের নাস্তা বাদ দিয়ে থাকেন, যা শুনতে যুক্তিসঙ্গত মনে হলেও এর ফল হয় উল্টো। গবেষণায় দেখা গেছে, দিনের প্রথম খাবার বাদ দিলে পরবর্তীতে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে এবং অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।
২. যখন-তখন নাস্তা করা:
টিভি দেখা, সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করা বা কাজ করার সময় অযথা নাস্তা করার অভ্যাস থাকলে অনেক বেশি ক্যালরি গ্রহণ করা হতে পারে। সচেতনতার অভাবে অতিরিক্ত খাবার খাওয়া হয়ে যায়, যার ফলে কঠোর ডায়েট অনুসরণ করার পরেও ওজন কমানো কঠিন হয়ে পড়ে।
৩. খুব দ্রুত খাওয়া:
যখন দ্রুত খাবার খান, তখন আপনার মস্তিষ্ক পেট ভরে যাওয়ার সংকেত পেতে পর্যাপ্ত সময় পায় না। এর ফলে আপনি প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খেয়ে ফেলেন, যা ওজন কমার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে। তাই খাবারের গতি কমানোর চেষ্টা করুন। ভালোভাবে চিবিয়ে খান, কামড়ের মাঝে কাঁটাচামচ রেখে দিন এবং খাবারের স্বাদ উপভোগ করুন।
৪. তরল ক্যালরির পরিমাণ কমিয়ে দেখা:
চিনিযুক্ত পানীয়, মিষ্টি কফি, এমনকি কিছু স্মুদিও আপনার পেট না ভরিয়ে অতিরিক্ত ক্যালরি যোগ করতে পারে। এই লুকানো ক্যালরিগুলো সহজেই ওজন বাড়িয়ে দেয়। তাই জল, ভেষজ চা বা ব্ল্যাক কফি পান করার চেষ্টা করুন। যদি স্বাদযুক্ত পানীয় পছন্দ করেন, তাহলে কম ক্যালরি বা মিষ্টি ছাড়া অন্য কোনো পানীয় বেছে নিন।
৫. পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া:
ঘুমের অভাব ক্ষুধা এবং তৃপ্তি নিয়ন্ত্রণকারী হরমোনগুলোকে ব্যাহত করে। এর ফলে ক্ষুধা বৃদ্ধি পায় এবং উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবারের প্রতি আকাঙ্ক্ষা বাড়ে। তাই প্রতি রাতে সাত থেকে নয় ঘণ্টা মানসম্পন্ন ঘুমের লক্ষ্য রাখুন এবং একটি নিয়মিত ঘুমানোর রুটিন মেনে চলুন।
এই অভ্যাসগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকুন এবং সেগুলো পরিবর্তন করার চেষ্টা করুন। ছোট ছোট এই পরিবর্তনগুলো আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টায় বড় ভূমিকা রাখতে পারে।