দিল্লি এবং তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বায়ু দূষণের অন্যতম কারণ হলো ফসলের অবশিষ্টাংশ (পরালি) জ্বালানো। তবে এবছর প্রশাসন ও কৃষকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এক ঐতিহাসিক সাফল্য এসেছে। বিশেষত হরিয়ানার পানিপথ জেলায় প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ এবং কৃষকদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সচেতনতার কারণে, এখনও পর্যন্ত পরালি পোড়ানোর একটিও ঘটনা সামনে আসেনি।
গত বছর এই সময়ে পানিপথে ১৬টি ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছিল, কিন্তু এবছর সেই সংখ্যা একেবারে শূন্য।
কীভাবে সম্ভব হলো এই সাফল্য?
পানিপথ জেলা প্রশাসন ফসলের অবশিষ্টাংশ ব্যবস্থাপনার জন্য বেশ কিছু কঠোর ও উৎসাহমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে:
উৎসাহ ভাতা বৃদ্ধি: কৃষকদের অবশিষ্টাংশ ব্যবস্থাপনায় উৎসাহিত করতে সরকার প্রতি একর জমিতে উৎসাহ ভাতা বাড়িয়ে ১২০০ টাকা করেছে।
যন্ত্রের ব্যবহার: কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে ফসল কাটার পর কৃষকরা ‘বেলার’ নামক যন্ত্রের সাহায্যে খড়ের গাঁট তৈরি করছেন অথবা জমিতেই লাঙল দিয়ে অবশিষ্টাংশ মিশিয়ে দিচ্ছেন। বর্তমানে জেলায় প্রায় ৬০টি বেলার চালু আছে। সহকারী কৃষি প্রকৌশলী সুধার কুমার জানান, যেখানেই কৃষকের প্রয়োজন হচ্ছে, সেখানেই দ্রুত বেলার পাঠানো হচ্ছে।
সার হিসাবে ব্যবহার: কৃষকরা অবশিষ্টাংশগুলিকে জমিতে মিশিয়ে দিচ্ছেন, যা একদিকে যেমন পরিবেশ সংরক্ষণ করছে, তেমনই অন্যদিকে জমির উর্বরতা শক্তি বাড়াতে সাহায্য করছে।
পরালি প্রোটেকশন ফোর্স: অবশিষ্টাংশ ব্যবস্থাপনায় কৃষকদের সাহায্য করার জন্য একটি ‘পরালি প্রোটেকশন ফোর্স’ গঠন করা হয়েছে। এই ফোর্স নিশ্চিত করছে যে কোনো কৃষক যেন অবশিষ্টাংশ ব্যবস্থাপনায় কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হন।
স্বস্তি এলেও সতর্কতা জারি
এই সাফল্যের ফলস্বরূপ, পানিপথ জেলার কোনো গ্রামই এখন ‘রেড জোন’-এ নেই। মাত্র সাতটি গ্রাম ‘ইয়েলো জোন’-এ রয়েছে।
পরালি পোড়ানোর একটিও ঘটনা না থাকা সত্ত্বেও, জেলার সামগ্রিক বায়ু গুণমান সূচক (AQI) বর্তমানে ১৭০-এ রয়েছে, যা ‘ইয়েলো জোন’-এর আওতায় পড়ে। তবে, প্রশাসনের মতে, ফসলের কাটা এখনও চলছে এবং আগামী দিনগুলিতেও যেন একটিও ঘটনা না ঘটে, সেদিকে কঠোর নজর রাখা হচ্ছে।