বিহার বিধানসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ। যদিও ‘INDIA’ জোট এখনও তাদের আসন বন্টন নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেনি, কিন্তু এরই মধ্যে আরজেডি (RJD) সভাপতি লালু প্রসাদ যাদব তাঁর পছন্দের প্রার্থীদের মধ্যে দলীয় প্রতীক বিতরণ শুরু করে দিয়েছেন। এই পদক্ষেপ জোটের শরিকদের মধ্যে কিছুটা অস্বস্তি তৈরি করলেও, আরজেডি এবার আগেভাগেই নিজেদের নির্বাচনী প্রস্তুতি সেরে নিতে চাইছে।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ি দেবীর বাসভবন, ১০, সার্কুলার রোডের বাইরে সোমবার দিনভর উপচে পড়েছিল ভিড়। দিল্লি থেকে যাদব দম্পতি আদালতে হাজিরা দিয়ে ফেরার পর থেকেই প্রতীক নিতে আগ্রহী নেতারা এখানে ভিড় জমাতে শুরু করেন। ফোন পেয়েই একাধিক প্রার্থী লালু-রাবড়ির বাসভবন থেকে হাসিমুখে দলীয় প্রতীক হাতে নিয়ে বেরিয়ে যান।
প্রতীক পেলেন কারা?
প্রতীক প্রাপকদের মধ্যে বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নাম রয়েছে, যা রাজনৈতিক মহলের নজর কেড়েছে:
সুনীল সিং (পরবত্তা): যিনি গত সপ্তাহেই মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের জেডি(ইউ) দল ছেড়েছেন।
নরেন্দ্র কুমার সিং ওরফে বোগো (মটিহানি): ইনি নীতীশ কুমারের দলের হয়ে দুবার এই আসনে জেতা একজন প্রাক্তন বিধায়ক।
এছাড়াও, আরজেডি-র বর্তমান বিধায়করা, যেমন ভাই বীরেন্দ্র, চন্দ্রশেখর যাদব (মাধিপুরা) এবং ইসরারিল মনসুরি (কাঁটি), দলীয় প্রতীক হাতে নিয়ে বেরিয়ে আসেন।
তেজস্বীর ‘ভূমিহার’ রণকৌশল
রাজনৈতিক মহলের মতে, জেডিইউ ছেড়ে আসা হেভিওয়েট নেতা সুনীল সিং এবং বোগো-কে প্রার্থীপদ দেওয়া আরজেডি সুপ্রিমো লালু প্রসাদের পুত্র ও উত্তরাধিকারী তেজস্বী যাদবের একটি বিশেষ রণকৌশল। এর মাধ্যমে তেজস্বী সেইসব ভূমিহার সম্প্রদায়ের সমর্থন জিততে চাইছেন, যারা ঐতিহ্যগতভাবে বিজেপি-র নেতৃত্বাধীন এনডিএ-কে সমর্থন করে থাকে।
আসন রফা নিয়ে অসন্তুষ্ট কংগ্রেস
অন্যদিকে, আরজেডি, কংগ্রেস, বাম দলগুলি এবং ভিআইপি দল নিয়ে গঠিত ‘INDIA’ জোটের মধ্যে আসন বন্টন এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এই জোটে পরে জেএমএম এবং আরএলজেপি-ও যোগ দিয়েছে।
বিহার কংগ্রেসের ভারপ্রাপ্ত নেতা কৃষ্ণা আল্লাভারু দ্রুত আসন রফা ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “জোটের কোনো ক্ষতি না করে বিহারের মানুষের জন্য একটি ভালো সরকার গঠন করাই আমাদের প্রচেষ্টা। আমরা মল্লিকার্জুন খাড়গে, রাহুল গান্ধী, লালু যাদব এবং তেজস্বী যাদবের ওপর সম্পূর্ণ আস্থা রাখি এবং অনুরোধ করছি, তাঁরা যেন দ্রুত আসন রফা চূড়ান্ত করে ঘোষণা করেন।”
উল্লেখ্য, বিহারে বিধানসভা নির্বাচন হবে আগামী ৬ ও ১১ নভেম্বর, এবং ভোট গণনা হবে ১৪ নভেম্বর। প্রতীক বিতরণের এই পদক্ষেপ আরজেডি-কে এগিয়ে রাখলেও, জোটে দ্রুত সমঝোতা না হলে তা সমস্যা বাড়াতে পারে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।