দেশের অর্থনীতিতে এবার এল দারুণ স্বস্তির খবর। খাদ্যপণ্যের দাম ক্রমাগত হ্রাসের কারণে সেপ্টেম্বর মাসে ভারতের খুচরো মূল্যস্ফীতি (CPI) ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (RBI) নির্ধারিত ২-৬ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার নীচে নেমে এসেছে। সোমবার প্রকাশিত সরকারি তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসে খুচরো মূল্যস্ফীতির হার কমে দাঁড়িয়েছে ১.৫৪ শতাংশে, যা অগস্টে ছিল ২.০৭ শতাংশ।
জাতীয় পরিসংখ্যান অফিস (NSO) নিশ্চিত করেছে, এই ১.৫৪ শতাংশ হার ২০১৭ সালের জুনের পর থেকে মুদ্রাস্ফীতির সর্বনিম্ন স্তর। এর অর্থ, বিগত আট বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন মুদ্রাস্ফীতি ঘটেছে কেবল ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে।
কেন কমলো মূল্যস্ফীতি?
খুচরো মূল্যস্ফীতির এই তীব্র পতনের পিছনে প্রধান কারণগুলি হলো:
১. অনুকূল ভিত্তি প্রভাব (Favourable Base Effect): গত বছরের তুলনায় এই বছর দাম কম থাকায় এই প্রভাব দেখা গেছে।
২. খাদ্যমূল্য হ্রাস: খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি নেতিবাচক (-)২.২৮ শতাংশে নেমে এসেছে। অগস্টে এটি ছিল (-)০.৬৪ শতাংশ। এই নেতিবাচক হার ইঙ্গিত দেয় যে খাদ্যদ্রব্য আগের বছরের তুলনায় সস্তা হয়েছে।
এনএসও-র মতে, শাকসবজি, ডাল ও পণ্য, তেল ও চর্বি, ফলমূল, শস্য, ডিম এমনকি জ্বালানি ও আলোর মতো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের দাম কমেছে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের জন্য বড় স্বস্তি:
মুদ্রাস্ফীতির এই নিম্নমুখী প্রবণতা ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের জন্য বড় স্বস্তি এনে দিয়েছে।
সম্প্রতি, আরবিআই তার দ্বিমাসিক মুদ্রানীতি পর্যালোচনার সময় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য মুদ্রাস্ফীতির পূর্বাভাস ৩.১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২.৬ শতাংশ করেছিল। সেপ্টেম্বরের পরিসংখ্যান সেই পূর্বাভাসের চেয়েও কম এসেছে।
বিশ্লেষকদের বিশ্বাস, মুদ্রাস্ফীতির এই উল্লেখযোগ্য হ্রাস ভবিষ্যতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে রেপো রেট কমানোর জন্য আরও সুযোগ করে দিতে পারে। এই বছরের শুরু থেকে আরবিআই ১০০ বেসিস পয়েন্ট সুদের হার কমিয়েছে। অর্থনীতিবিদরা ডিসেম্বরের বৈঠকে সুদের হার আরও ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমানোর আশা করছেন, যা দেশের অর্থনীতিকে আরও চাঙ্গা করবে এবং ঋণ সস্তা হবে।
এছাড়াও, জিএসটি (GST) শিথিল করার ফলে আগামী মাসগুলিতেও জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।